বাংলাদেশ ০২:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
কালুরঘাট ফেরিঘাটে মারামারি, ফেরি পারাপার বন্ধ বিক্রমপুর চাঁদের হাটের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব পালিত নবাগত ও বিদায়ী ওসিকে পৌর ছাত্র দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ব্রাহ্মণপাড়া যৌতুকের দাবীতে গৃহ বধুকে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা বাস-পিকআপ সংঘর্ষ: পিকআপ ভ্যান চালক নিহত দৌলতখানে জয়নুল আবদীন ল্যাবরেটরী হাই স্কুলে আন্তঃশ্রেনি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ব্রাহ্মণপাড়ায় গো-খাদ্যের চরম সংকট সলঙ্গায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত কচুয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত পূর্বশক্রতার জেরে সংঘর্ষ নারী পুরুষসহ আহত ৫ রেফার্ড ২ জন লালপুরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির আলোচনা কালে মারপিট ও জখম, সাংবাদিক ফজলু সহ আটক-৪জন যৌতুক দিতে না পারায় গৃহবধূকে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে হত্যা, আদালতে মামলা দায়ের কয়রার খান সাহেব কোমরউদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ আত্মগোপনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব কালুরঘাট সেতু নির্মাণসহ ১৪ দফা দাবি রাবির বঙ্গবন্ধু হল থেকে পুনরায় অস্ত্র উদ্ধার

দশ বছর ধরে বাসা-মেসে ফ্রি সার্ভিসেও মন গলেনি” চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে কর্মচারীর বাড়ির দলিল ও ফাঁকা চেক নিলেন রুয়েট শিক্ষক

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:৫১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ মে ২০২২
  • ১৭৩৮ বার পড়া হয়েছে

দশ বছর ধরে বাসা-মেসে ফ্রি সার্ভিসেও মন গলেনি" চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে কর্মচারীর বাড়ির দলিল ও ফাঁকা চেক নিলেন রুয়েট শিক্ষক

 নিরেন দাস, জয়পুুরহাট প্রতিনিধিঃ-
মো: মনিরুল ইসলাম মুকুল (৪৩) বাড়ি রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া এলাকায়। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ফ্রিতে (বিনা পারিশ্রমিকে) কাজ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মিয়া মো: জগলুল সাদাতের বাসা ও মেসে। রুয়েটে একটি পাবার চাকরির আশায় এই এক যুগ ফ্রি সার্ভিস দিয়েছেন তিনি।
তবে জগলুল সাদাতের সহযোগিতায় প্রথমে কেয়ারটেকার পদে অনিয়মিত ও পরে এমএলএসএস পদে নিয়মিত একটি চাকরি মিললেও শান্তিতে নেই মুকুল। কারণ এই চাকরির জন্য জগলুল সাদাতকে দাবিকৃত ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে তাকে। অন্যথায় মুকুলকে চাকরিচ্যুত করা হবে। তাই রুয়েটের এই শিক্ষকই মুকুলকে পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে টাকা পরিশোধ করবেন।
কথা অনুযায়ী- মুকুলের বাড়ির জমির দলিল ও ফঁাকা ব্যাংক চেক ও ৩০০ টাকা মূল্যে স্ট্যাম্প নিয়েছেন শিক্ষক জগলুল সাদাত। যেদিন টাকা পরিশোধ করতে পারবেন সেদিন জমির দলিল ও ফঁাকা চেক ফেরত পাবেন বলে তাকে সাফ জানিয়ে দেন শিক্ষক জগলুল সাদাত। এ অবস্থায় চরম নিরুপায় হয়ে পড়েছেন মুকুল।
মুকুল বলেন, প্রথমে প্রায় ৮ বছর জিয়া হলে কেয়ারটেকার পদে (অনিয়মিত) চাকরি করেছি। তখন জগলুল সাদাত স্যার জিয়া হলের প্রভোস্ট ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের জুন মাসে এমএলএসএস পদে (নিয়মিত) চাকরীতে যোগদান করি।
তিনি বলেন, আমাকে জগলুল সাদাত স্যার বলেছিলেন তোমাকে রুয়েটে চাকরি দেব। তবে শর্ত হচ্ছে- আমার বাড়ি ও মেসে নিয়মিত ফ্রি সার্ভিস দিতে হবে। সামান্য একটি চাকরির আশায় আমি দীর্ঘ ১০ বছর বাসা ও মেসে চাকরের মতো বিনা বেতনে কাজ করেছি। এরপর জিয়া হলে কেয়ারটেকার পদে অনিয়মিত ও পরে এমএলএসএস পদে নিয়মিত একটি চাকরি পাই। এখনো এই চাকরিতে আছি। কিন্তু আমি শান্তিতে নেই।
মুকুল বলেন, জগলুল সাদাত স্যার আমাকে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। আমার ধারণা ছিল- স্যারের বাসা ও মেসে যেহেতু ফ্রিতে দীর্ঘ এক ১০ বছর কাজ করেছি। তাই স্যার আমার কাছ থেকে চাকরির বিনিময়ে টাকা নেবেন না। কিন্তু ১০বছর বিনাপারিশ্রমিকে কাজ করেও স্যারের মন গলেনি।
স্যার আমাকে বললেন, তোমাকে পিয়ন পদে চাকরি দেব। এজন্য আমাকে ১১ লাখ টাকা দিতে হবে। তখন আমি স্যারকে বললাম, স্যার আমি সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা দিতে পারবো। আমার এমন কথা শুনে স্যার বলেন, টাকা দিতে না পারলে ফঁাকা ব্যাংক চেক, ৩০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প বাড়ির জমির দলিল দিবে। তুমি চাকরিতে যোগদানের পর তোমাকে লোন তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। তখন তুমি লোন তুলে আমার দাবিকৃত ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করবে।
এরই মধ্যে রুয়েট রুপালি ব্যাংক শাখা হতে ৭ লাখ টাকা লোন তুলেন মুকুল। আর তার বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে আরো দেড় লাখ টাকা লোন নিয়ে মোট সাড়ে ৮লাখ টাকা জগলুল স্যারের হাতে তুলে দেন তিনি। স্যার অবশিষ্ট আড়াই লাখ টাকার জন্য মুকুলের বাড়ির আড়াই কাঠা জমির দলিল এবং ফঁাকা চেক ও স্ট্যাম্প গ্রহণ করেন। তবে মুকুল স্যারের কাছে সময় নেন এক বছরের।
এরই মধ্যে অর্থলোভী স্যার তাকে চাকরীচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। তিনি চেক বাউন্স করার জন্য তার একজন বিশ্বস্ত শিক্ষককে রুয়েট রুপালি ব্যাংকে পাঠান। তার আগেই ব্যাংক থেকে মুকুলকে ফোন দিয়ে জানানো হয়। আপনার নামের চেক বাউন্স করতে কাটাখালির এক ব্যক্তি এসেছেন। খবর পেয়ে মুকুল ব্যাংকে ছুটে যান।
কিন্ত তার আগেই ওই ব্যক্তি ব্যাংক থেকে সরে পড়ে। এরপর মুকুল দৌড়ে যান জগলুল স্যারের কাছে। বলেন, স্যার আপনার কাছে টাকার জন্য সময় নিয়েছি। বাড়ির দলিল, স্ট্যাম্প ও ফাকা চেক বাইয়ের সবকটি পাতায় সহি দিয়ে আপনাকে হস্তান্তর করেছি। তারপরও আপনি আমাকে মানুষিক ভাবে নির্যাতন করছেন কেন? এ সময় উত্তরে স্যার বলেন, চাকরি রক্ষা করতে হলে দ্রুত টাকা পরিশোধ করতে হবে। নইলে বাড়ির দলিল দেবো না। উল্টা চেকে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবো।
স্যারের এমন বক্তব্যে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী মুকুল। এরই মধ্যে তিনি টাকার টেনশানে স্ট্রোক করেন। বর্তমানে টাকা যোগাড় করতে ধরনা দিচ্ছেন দ্বারে দ্বারে। চাকরি না থাকলে বৌ-বাচ্চাদের খরচ চালাবেন কিভাবে এমন চিন্তায় ঘুম নেই তার। প্রতিকারের আশায় রুয়েটের বিভিন কর্মকর্তা কর্মচারির দারস্থ হয়েছেন।
বিষয়টি সবার মধ্যে জানানানি হলে (২৭ রমজান) মিয়া মো: জগলুল সাদাত মুকুলের বড় ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম জুয়েলকে ডেকে বলেন তোমার ভাইয়ের কাছে থেকে নেওয়া সকল কিছু ফেরত দেবো। এজন্য আমাকে ঈদের পর পর্যন্ত সময় দাও। এরপর তিনি ঈদ করে বরিশাল জেলায় নিজ বাড়িতে যান। ছুটি শেষে রুয়েটের এসে মুকুল ও তার  বড়ভই জুয়েলকে ডেকে বলেন সোমবার (১৬ মে) তার কাছে থাকা মুকুলের আমানত ও অতিরিক্ত নেওয়া টাকা ফেরত দেবেন।
গত সোমবার তিনি অসুস্থতার কারন দেখিয়ে বলেন শুক্রবার (২০ মে) উল্লেখিত আমানত গুলি ফেরত দেবেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় মুকুলের ভাই জুয়েলকে ফোন করে বলেন, আমি টাকা একা খাইনি। তাই আমাকে আরও ১ মাস সময় দিতে হবে। মুকুলের ভাই বলেন স্যার, আপাতত চেক বই, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প ও বাড়ির দলিলটা দেন।
উত্তরে তিনি জানান, সবকিছু এক সাথেই ফেরত দেবো। এরই মধ্যে কুচক্রি শিক্ষক মুকুল তার সহকর্মী রুয়েটের কর্মচারি বাবু ও সোহেলের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করছেন এএসআই মোঃ বক্কর। ইতিমধ্যেই বাক্কর তিনজন কর্মচারির সাথেই যোগাযোগ করেছেন বলে জানান মুকুল।
রোববার (২২ মে) সকালে রুয়েট কর্মচারী মুকুলকে একটি চিঠি দিয়েছেন। মুকুল জানান, তাকে পিয়নপদ থেকে গার্ড পদে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার ডিমোশন হয়েছে। কিন্তু তাকে ডিউটিতে যোগ দিতে দেয়া হয়নি। বাড়াবাড়ি করলে সেই চাকরিও থাকবে না বলেও জানান রুয়েট কর্মচারী মুকুল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মিয়া মো: জগলুল সাদাত বলেন, সামনাসামনি আসেন আপনি কথা বলব। পরে কোথায় সামনাসামনি আসব একথা বলতেই মোবাইল সংযোগ কেটে দেন তিনি।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

কালুরঘাট ফেরিঘাটে মারামারি, ফেরি পারাপার বন্ধ

দশ বছর ধরে বাসা-মেসে ফ্রি সার্ভিসেও মন গলেনি” চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে কর্মচারীর বাড়ির দলিল ও ফাঁকা চেক নিলেন রুয়েট শিক্ষক

আপডেট সময় ১১:৫১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ মে ২০২২
 নিরেন দাস, জয়পুুরহাট প্রতিনিধিঃ-
মো: মনিরুল ইসলাম মুকুল (৪৩) বাড়ি রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া এলাকায়। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ফ্রিতে (বিনা পারিশ্রমিকে) কাজ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মিয়া মো: জগলুল সাদাতের বাসা ও মেসে। রুয়েটে একটি পাবার চাকরির আশায় এই এক যুগ ফ্রি সার্ভিস দিয়েছেন তিনি।
তবে জগলুল সাদাতের সহযোগিতায় প্রথমে কেয়ারটেকার পদে অনিয়মিত ও পরে এমএলএসএস পদে নিয়মিত একটি চাকরি মিললেও শান্তিতে নেই মুকুল। কারণ এই চাকরির জন্য জগলুল সাদাতকে দাবিকৃত ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে তাকে। অন্যথায় মুকুলকে চাকরিচ্যুত করা হবে। তাই রুয়েটের এই শিক্ষকই মুকুলকে পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে টাকা পরিশোধ করবেন।
কথা অনুযায়ী- মুকুলের বাড়ির জমির দলিল ও ফঁাকা ব্যাংক চেক ও ৩০০ টাকা মূল্যে স্ট্যাম্প নিয়েছেন শিক্ষক জগলুল সাদাত। যেদিন টাকা পরিশোধ করতে পারবেন সেদিন জমির দলিল ও ফঁাকা চেক ফেরত পাবেন বলে তাকে সাফ জানিয়ে দেন শিক্ষক জগলুল সাদাত। এ অবস্থায় চরম নিরুপায় হয়ে পড়েছেন মুকুল।
মুকুল বলেন, প্রথমে প্রায় ৮ বছর জিয়া হলে কেয়ারটেকার পদে (অনিয়মিত) চাকরি করেছি। তখন জগলুল সাদাত স্যার জিয়া হলের প্রভোস্ট ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের জুন মাসে এমএলএসএস পদে (নিয়মিত) চাকরীতে যোগদান করি।
তিনি বলেন, আমাকে জগলুল সাদাত স্যার বলেছিলেন তোমাকে রুয়েটে চাকরি দেব। তবে শর্ত হচ্ছে- আমার বাড়ি ও মেসে নিয়মিত ফ্রি সার্ভিস দিতে হবে। সামান্য একটি চাকরির আশায় আমি দীর্ঘ ১০ বছর বাসা ও মেসে চাকরের মতো বিনা বেতনে কাজ করেছি। এরপর জিয়া হলে কেয়ারটেকার পদে অনিয়মিত ও পরে এমএলএসএস পদে নিয়মিত একটি চাকরি পাই। এখনো এই চাকরিতে আছি। কিন্তু আমি শান্তিতে নেই।
মুকুল বলেন, জগলুল সাদাত স্যার আমাকে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। আমার ধারণা ছিল- স্যারের বাসা ও মেসে যেহেতু ফ্রিতে দীর্ঘ এক ১০ বছর কাজ করেছি। তাই স্যার আমার কাছ থেকে চাকরির বিনিময়ে টাকা নেবেন না। কিন্তু ১০বছর বিনাপারিশ্রমিকে কাজ করেও স্যারের মন গলেনি।
স্যার আমাকে বললেন, তোমাকে পিয়ন পদে চাকরি দেব। এজন্য আমাকে ১১ লাখ টাকা দিতে হবে। তখন আমি স্যারকে বললাম, স্যার আমি সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা দিতে পারবো। আমার এমন কথা শুনে স্যার বলেন, টাকা দিতে না পারলে ফঁাকা ব্যাংক চেক, ৩০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প বাড়ির জমির দলিল দিবে। তুমি চাকরিতে যোগদানের পর তোমাকে লোন তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। তখন তুমি লোন তুলে আমার দাবিকৃত ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করবে।
এরই মধ্যে রুয়েট রুপালি ব্যাংক শাখা হতে ৭ লাখ টাকা লোন তুলেন মুকুল। আর তার বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে আরো দেড় লাখ টাকা লোন নিয়ে মোট সাড়ে ৮লাখ টাকা জগলুল স্যারের হাতে তুলে দেন তিনি। স্যার অবশিষ্ট আড়াই লাখ টাকার জন্য মুকুলের বাড়ির আড়াই কাঠা জমির দলিল এবং ফঁাকা চেক ও স্ট্যাম্প গ্রহণ করেন। তবে মুকুল স্যারের কাছে সময় নেন এক বছরের।
এরই মধ্যে অর্থলোভী স্যার তাকে চাকরীচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। তিনি চেক বাউন্স করার জন্য তার একজন বিশ্বস্ত শিক্ষককে রুয়েট রুপালি ব্যাংকে পাঠান। তার আগেই ব্যাংক থেকে মুকুলকে ফোন দিয়ে জানানো হয়। আপনার নামের চেক বাউন্স করতে কাটাখালির এক ব্যক্তি এসেছেন। খবর পেয়ে মুকুল ব্যাংকে ছুটে যান।
কিন্ত তার আগেই ওই ব্যক্তি ব্যাংক থেকে সরে পড়ে। এরপর মুকুল দৌড়ে যান জগলুল স্যারের কাছে। বলেন, স্যার আপনার কাছে টাকার জন্য সময় নিয়েছি। বাড়ির দলিল, স্ট্যাম্প ও ফাকা চেক বাইয়ের সবকটি পাতায় সহি দিয়ে আপনাকে হস্তান্তর করেছি। তারপরও আপনি আমাকে মানুষিক ভাবে নির্যাতন করছেন কেন? এ সময় উত্তরে স্যার বলেন, চাকরি রক্ষা করতে হলে দ্রুত টাকা পরিশোধ করতে হবে। নইলে বাড়ির দলিল দেবো না। উল্টা চেকে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবো।
স্যারের এমন বক্তব্যে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী মুকুল। এরই মধ্যে তিনি টাকার টেনশানে স্ট্রোক করেন। বর্তমানে টাকা যোগাড় করতে ধরনা দিচ্ছেন দ্বারে দ্বারে। চাকরি না থাকলে বৌ-বাচ্চাদের খরচ চালাবেন কিভাবে এমন চিন্তায় ঘুম নেই তার। প্রতিকারের আশায় রুয়েটের বিভিন কর্মকর্তা কর্মচারির দারস্থ হয়েছেন।
বিষয়টি সবার মধ্যে জানানানি হলে (২৭ রমজান) মিয়া মো: জগলুল সাদাত মুকুলের বড় ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম জুয়েলকে ডেকে বলেন তোমার ভাইয়ের কাছে থেকে নেওয়া সকল কিছু ফেরত দেবো। এজন্য আমাকে ঈদের পর পর্যন্ত সময় দাও। এরপর তিনি ঈদ করে বরিশাল জেলায় নিজ বাড়িতে যান। ছুটি শেষে রুয়েটের এসে মুকুল ও তার  বড়ভই জুয়েলকে ডেকে বলেন সোমবার (১৬ মে) তার কাছে থাকা মুকুলের আমানত ও অতিরিক্ত নেওয়া টাকা ফেরত দেবেন।
গত সোমবার তিনি অসুস্থতার কারন দেখিয়ে বলেন শুক্রবার (২০ মে) উল্লেখিত আমানত গুলি ফেরত দেবেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় মুকুলের ভাই জুয়েলকে ফোন করে বলেন, আমি টাকা একা খাইনি। তাই আমাকে আরও ১ মাস সময় দিতে হবে। মুকুলের ভাই বলেন স্যার, আপাতত চেক বই, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প ও বাড়ির দলিলটা দেন।
উত্তরে তিনি জানান, সবকিছু এক সাথেই ফেরত দেবো। এরই মধ্যে কুচক্রি শিক্ষক মুকুল তার সহকর্মী রুয়েটের কর্মচারি বাবু ও সোহেলের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্ত করছেন এএসআই মোঃ বক্কর। ইতিমধ্যেই বাক্কর তিনজন কর্মচারির সাথেই যোগাযোগ করেছেন বলে জানান মুকুল।
রোববার (২২ মে) সকালে রুয়েট কর্মচারী মুকুলকে একটি চিঠি দিয়েছেন। মুকুল জানান, তাকে পিয়নপদ থেকে গার্ড পদে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার ডিমোশন হয়েছে। কিন্তু তাকে ডিউটিতে যোগ দিতে দেয়া হয়নি। বাড়াবাড়ি করলে সেই চাকরিও থাকবে না বলেও জানান রুয়েট কর্মচারী মুকুল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মিয়া মো: জগলুল সাদাত বলেন, সামনাসামনি আসেন আপনি কথা বলব। পরে কোথায় সামনাসামনি আসব একথা বলতেই মোবাইল সংযোগ কেটে দেন তিনি।