ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন এলাকায় নির্মিত মসজিদে স্থানীয় এক মুসল্লী নামাজ আদায়কে ঘিরে নানা অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসন ভবন এলাকায় নিজের অধিপত্য বিস্তার করতে মসজিদে নামাজ আদায়কে নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে নানা অপ্রিতিকতার সৃষ্টি করছেন উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকার এক বাসিন্দা।
এ বিষয়ে অভিযোগকারীর বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হওয়ায় প্রকৃত ঘটনা জানার আগ্রহে উপজেলায় কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন উপজেলার ধর্মপ্রান সুশিল সমাজসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে কর্মরত সাংবাদিকরা সরেজমিনে উপজেলা প্রশাসন এলাকায় গিয়ে ওই মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে আসা অনান্য মুসল্লীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী সাথে কথা বলেন।
এসময় একাধিক মুসল্লী ও মসজিদ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন,কবির নামের জনৈক্য এক ব্যাক্তি মসজিদে নামাজে আসার দোহাই দিয়ে প্রশাসন ভবন এলাকায় শাক-সবজি চাষসহ ফসলাদি ফলিয়ে আত্নসাৎতের অপচেষ্ঠায় মসজিদ নিয়ে নানা অপতৎপ্ররতায় লিপ্ত রয়েছেন। যার ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কিছু দিন ধরে তিনি মসজিদের ইমামকে নিয়ে অপ্রিতিকর মন্তব্যসহ জামায়াতে নামাজ আদায়কালিন সময়ে একা একা নামাজ আদায়সহ অনান্য মুসল্লীদের সাথে দূরব্যবহার করে আসছেন।
বিষয়টি নিয়ে মুসল্লীদের পক্ষ থেকে ওই ব্যাক্তিকে আল্লাহর ঘর মসজিদ নিয়ে নুংরামীতে মেতে না উঠার অনুরোধ জানালে তিনি তা না মেনে উল্টো উপজেলা প্রশাসনের ব্যাক্তিদের জড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন।এতে মসজিদের মুসল্লীরা হতবাক হচ্ছেন এবং সুষ্ট তদন্তপূর্বক অপ্রিতিকর ঘটনার সৃষ্টিকারী ওই ব্যক্তির শাস্তি দাবি করছেন।
রমজান মাসে মসজিদের এতেকাফ পালনকারী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মুসল্লী নুরুল ইসলাম জানান,সম্প্রতি মসজিদের সাবেক ইমাম মাওলানা মসকুর আহমদ অসুস্থতার জন্য ইমামতির দ্বায়িত্ব থেকে চলে গেলে কবির আহমদ নামীয় এক মুসল্লী মসজিদে নামাজে এসে প্রশাসন ভবন এলাকায় শাক-সবজী চাষসহ কারনে-অকারনে বর্তমান ইমাম রায়হান আহমদ ও উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত একাধিক ব্যাক্তির সাথে নানা দূরব্যবহার করছেন।
এছাড়া তিনি প্রতি ওয়াক্তে জামায়াতে নামাজ আদায় চলাকালিন সময়ে মসজিদে এসে মসজিদের ভিতরে একা একা নামাজ আদায় করেন।বিষয়টি মসজিদ কেন্দ্রিক হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কবির আহমদকে মসজিদে এসে এসব কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহব্বান জানিয়েছেন।
দায়িত্ব প্রাপ্ত ইমাম রায়হান আহমদ বলেন, মাওলানা মসকুর আহমদ অসুস্থ থাকায় মসজিদে না আসায় আমি ইমামতী দায়িত্ব পালনের পর থেকে ওই মুসল্লী আমার সাথে খারাপ আচরণ করে আসছে। তিনি মসজিদে নামাজ আদায়ে আসলেও তিনি জামায়াতে অংশ গ্রহন না নিয়ে একা একা নামাজ আদায় করেন। যার জন্য অন্যন্য মুসল্লীদের সাথে তার প্রায়ই ধন্ধ লেগে থাকে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ওই ব্যক্তি অপ্রিতিকর মন্তব্যসহ মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ প্রদান করে আমিসহ উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত একাধিক ব্যক্তির মান সম্মান ক্ষুন্ন করার কাজে মেতে উঠেছেন।
উপজেলা পরিষদে কর্মরত শামীম আহমদ জানান, কবির আহমদ নামীয় ওই মুসল্লীকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। গত কয়েকদিন আগে আসরের নামাজে মসজিদে গেলে অন্যান্য মুসল্লীদের সাথে ওই ব্যক্তি তর্কাতর্কিতে লিপ্ত দেখতে পেয়ে আমি উভয়কে শান্ত থাকার কথা বলি।
এসময় আমি জানতে পারি মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায় কালীন সময়ে তিনি একা একা নামাজ পড়ায় জামায়াতের ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই মুসল্লীদের সাথে তার ঝগড়া হয়।তাই মুসল্লীরা মসজিদে আসলে তাকে জামাতে নামাজ আদায়ে অনুরোধ জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হন।
মুসল্লী কবির আহমদ বলেন,মোয়াজ্জিনকে ইমাম বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে সড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে মসজিদে নামাজ আদায়ে নিষেধ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলিমা রায়হানা বলেন, সম্প্রতি কিছুদিন ধরে এক মুসল্লী মসজিদে এসে জামায়াত চলাকালিন সময়ে ইমাম সাহেবের পিছনে নামাজ আদায় না করে একা একা নামাজ আদায় নিয়ে অন্যান্য মুসল্লীদের সাথে অপ্রিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন।
এতে মসজিদের পবিত্রতা ও প্রশাসনিক ভবন এলাকায় নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রাসহ মসজিদ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়ে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ওই মুসল্লীকে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা পূর্বক ইসলামিক নীতি আদর্শ মেনে মসজিদে নামাজ আদায়ে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্ত সেটিকে তিনি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।