ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা জুড়ে বোরো ধান কাটা মারায়ের ভরা মৌসুম চলছে। মাঠ থেকে ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কিন্তু নানা কারণে কৃষকের মুখে হাসি নেই। ধানের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া, বৈরী আবহাওয়া, চড়া দামেও কৃষি শ্রমিক সংকটের কারণে বোরো ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সেখানে ১৬ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে ইরি -বোরো ধান আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে হাইব্রীড ৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর, উফসি ৭ হাজার ৪২৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষক। আর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৯২.৯২ মেট্রিক টন।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, শ্রমিক মজুরী বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের উৎপাদনের খরচ আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। আর ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।এই অবস্থায় কৃষকরা উচ্চ মূল্যে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। এবার বোরো ধান চাষাবাদে লাভের মুখ দেখতে পারবে না বর্গাচাষীরা। বর্তমানে হাট-বাজারগুলোতে নতুন ধান প্রতিমণ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।
এতে কোন মতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারলেও লাভের মুখ দেখবে না কৃষক। উপজেলার পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের বর্গাচাষী রইচ উদ্দিন, মোজাম্মেল ও জয়নাল বলেন, চুক্তি ছাড়া একক কোন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এক বিঘা জমির ধান কাটতে কৃষি শ্রমিকদেরকে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও এক বিঘা(৩২ শতাংশ) জমিতে চারা রোপন থেকে কাঁটা মাড়াই পর্যন্ত যত টাকা খরচ হয়েছে। উক্ত জমির মালিককে ছয় মণ ধান পরিশোধ করার পরে সবটুকু ধান বিক্রি করে খরচের টাকা তোলা সম্ভব না।
কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, তিন বিঘা জমিতে ধান লাগাইছি। ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। চুক্তি ছাড়া কেউ দিন হাজিরা কামলা দিতে চায় না।তাই কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে সাথে নিয়ে জমিতে ধান কাটতে নামছি। ধানের দাম আশানুরুপ না। কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সংশিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের খোঁজ খবর রেখেছি। এবার চৈত্র- বৈশাখ মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। ক্ষেতের আইল কেটে বৃষ্টির পানি বের করে দেয়া, সময়মত সার কিটনাশক প্রয়োগসহ নানা পরামর্শ দেয়ায় উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]