বাংলাদেশ ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
ভূঞাপুরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় দুই শ্রমিককে কারাদণ্ড সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুলের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত শুরু  তালতলীতে ইউএনও’র বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ভান্ডারিয়ায় হিন্দু যুবককে কুপিয়ে জখম কাউখালীতে করলা চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন কৃষক তৈয়ব আলী কয়রায় সুপেয় খাবার পানির জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সাথে গনশুনানী ও পিটিশন জমা কয়রা সেতুর টোল আদায়ে আইনগত সহায়তা চেয়েছেন আনার আলী ভৈরবনদ খননে অনিয়মের অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে স্মারকলিপি  চট্টগ্রামের ১৩ ওসিকে বদলী বঙ্গবন্ধু হল পরিদর্শন করলেন রাবি উপাচার্য মুন্সীগঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত প্রধান উপদেষ্টা ও আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ কাছে খোলা চিঠি: গণমাধ্যম কর্মী শাহাদাত হোসেন নওগাঁয় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দুই সাংবাদিককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন। নলছিটিতে বিএনপি নেতা রিমনের চাদাঁবাজী ও দখল বানিজ্যে সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ:বহিস্কার দাবী

বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি ফজলুল হকের আজ তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:১৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মে ২০২২
  • ১৭৫০ বার পড়া হয়েছে

বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি ফজলুল হকের আজ তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, ৬৯এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের আজ (শনিবার, ১৪মে/২০২২) তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের কবর জিয়ারত, কোরান খানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন করেছে।

 

 

 

উল্লেখ্য, মরহুম মৌলভী জলফু মিয়া ও মোছাঃ আনোয়ারা বেগমের ৯ সন্তানের মধ্যে ফজলুল হক ছিলেন ২য় সন্তান। ১৯৪৭ সালে ফজলুল হক জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন রাজনীতি সচেতন। সপ্তম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় গৌরীপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালের বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে গৌরীপুরের আনাচে-কানাচে চোঙ্গা ফুঁকিয়ে দাবী আদায়ে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা করেন। ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করলে পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে পুরো বাংলাদেশের মতো ফজলুল হকের নেতৃত্বে গৌরীপুরও গর্জে উঠে। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ৬৯ সালে গৌরীপুর কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন।

 

 

 

এরপরই গণঅভ‚ত্থানের ডাকে গৌরীপুর সরকারি কলেজ ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিনই গৌরীপুরের রাজপথে শ্লোগান-মিছিলের অগ্রগণ্য ছিলেন তিনি। জানুয়ারী মাসে আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে উঠলে তা সফল করার লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে ২৭ জানুয়ারী সরকারি কলেজ থেকে একটি মিছিল মধ্য বাজারে আসলে পাকিস্তানি সরকারের পেটুয়া পুলিশবাহিনী গুলি চালালে তারই সহপাটি আজিজুল হক হারুন গুলিতে নিহত হন, তারপরো তিনি আন্দোলনের পথ থেকে দমে যাননি।

 

 

গণআন্দোলনকে চাঙ্গা করতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন জায়গা পিকেটিং করেছেন, ছাত্র-জমায়েত করেছেন এবং আন্দোলনকে সফলও করেছেন। তিনিই তার পরের বছর থেকে সহপাটি হারুনের স্মরণে মধ্যবাজার একটি জায়গার নামকরণ করেন হারুন পার্ক এবং দিবসটি পালন করে আসছেন আমৃত্যু। ’৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ডাকে গৌরীপুরের বিভিন্ন জায়গায় বাংলার স্বাধীকারের পক্ষে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ৭০ এর নির্বাচনের সময় একবার কলতাপাড়া হয়ে বঙ্গবন্ধু নান্দাইলে আওয়ামীলীগের প্রচারণা যাওয়ার সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে গৌরীপুরে নিয়ে আসবেন এই জন্যই রাস্তায় শুয়ে অবরোধ করেন কিন্তু সময় না থাকায় বঙ্গবন্ধু তাকে ধমক দিয়ে সরতে বললেন।

 

 

 

বঙ্গবন্ধু তাঁকে আদর করে ফজলু (তুই) বলে ডাকতো। সত্তরের নির্বাচনে গৌরীপুরের এমসিএ হাতেম আলী মিয়াকে বিজয়ী করতে অনন্য ভ‚মিকা পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মাত্র ২৭ বছর বয়সে জীবনের মায়া ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভারতের তোরায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ২৯ দিন অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ গ্রহন শেষে ১১ নং সেক্টরের অধীনে কোম্পানি কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর নির্দেশনার জন্য সদা সর্বদা এস,এল,আর নিয়ে প্রস্তুত থাকতেন। যুদ্ধে প্লাটুনের ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

 

 

 

স্বাধীনতা উত্তর সময়ে তিনি গৌরীপুর কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। ১৯৭২ সালে ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের গৌরীপুর থানা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে গৌরীপুর থানা শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এবং হারুন পার্ক সংলগ্ন শ্রমিক ইউনিয়নের জায়গা বরাদ্দ নিয়ে শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। ১৯৮১ সালে গৌরীপুর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ দ্বিধাবিভক্ত হলে বাকশালে যোগ দিয়ে তিনি গৌরীপুর উপজেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

 

 

ভিপি ফজলুল হকের একমাত্র পুত্র রাজিবুল হক তাঁর পিতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের জন্য, সদা হাস্যেজ্বল, রসিকজন হিসেবে ছোট-বড় সবার মাঝেই ছিলেন জনপ্রিয়। চিরদিন গৌরীপুরের মানুষের মধ্যে অমর হয়ে থাকবেন।

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

ভূঞাপুরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় দুই শ্রমিককে কারাদণ্ড

বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি ফজলুল হকের আজ তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী

আপডেট সময় ১১:১৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মে ২০২২

ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, ৬৯এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের আজ (শনিবার, ১৪মে/২০২২) তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের কবর জিয়ারত, কোরান খানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন করেছে।

 

 

 

উল্লেখ্য, মরহুম মৌলভী জলফু মিয়া ও মোছাঃ আনোয়ারা বেগমের ৯ সন্তানের মধ্যে ফজলুল হক ছিলেন ২য় সন্তান। ১৯৪৭ সালে ফজলুল হক জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন রাজনীতি সচেতন। সপ্তম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় গৌরীপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালের বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে গৌরীপুরের আনাচে-কানাচে চোঙ্গা ফুঁকিয়ে দাবী আদায়ে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা করেন। ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করলে পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে পুরো বাংলাদেশের মতো ফজলুল হকের নেতৃত্বে গৌরীপুরও গর্জে উঠে। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ৬৯ সালে গৌরীপুর কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন।

 

 

 

এরপরই গণঅভ‚ত্থানের ডাকে গৌরীপুর সরকারি কলেজ ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিনই গৌরীপুরের রাজপথে শ্লোগান-মিছিলের অগ্রগণ্য ছিলেন তিনি। জানুয়ারী মাসে আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে উঠলে তা সফল করার লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে ২৭ জানুয়ারী সরকারি কলেজ থেকে একটি মিছিল মধ্য বাজারে আসলে পাকিস্তানি সরকারের পেটুয়া পুলিশবাহিনী গুলি চালালে তারই সহপাটি আজিজুল হক হারুন গুলিতে নিহত হন, তারপরো তিনি আন্দোলনের পথ থেকে দমে যাননি।

 

 

গণআন্দোলনকে চাঙ্গা করতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন জায়গা পিকেটিং করেছেন, ছাত্র-জমায়েত করেছেন এবং আন্দোলনকে সফলও করেছেন। তিনিই তার পরের বছর থেকে সহপাটি হারুনের স্মরণে মধ্যবাজার একটি জায়গার নামকরণ করেন হারুন পার্ক এবং দিবসটি পালন করে আসছেন আমৃত্যু। ’৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ডাকে গৌরীপুরের বিভিন্ন জায়গায় বাংলার স্বাধীকারের পক্ষে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ৭০ এর নির্বাচনের সময় একবার কলতাপাড়া হয়ে বঙ্গবন্ধু নান্দাইলে আওয়ামীলীগের প্রচারণা যাওয়ার সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে গৌরীপুরে নিয়ে আসবেন এই জন্যই রাস্তায় শুয়ে অবরোধ করেন কিন্তু সময় না থাকায় বঙ্গবন্ধু তাকে ধমক দিয়ে সরতে বললেন।

 

 

 

বঙ্গবন্ধু তাঁকে আদর করে ফজলু (তুই) বলে ডাকতো। সত্তরের নির্বাচনে গৌরীপুরের এমসিএ হাতেম আলী মিয়াকে বিজয়ী করতে অনন্য ভ‚মিকা পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মাত্র ২৭ বছর বয়সে জীবনের মায়া ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভারতের তোরায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ২৯ দিন অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ গ্রহন শেষে ১১ নং সেক্টরের অধীনে কোম্পানি কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর নির্দেশনার জন্য সদা সর্বদা এস,এল,আর নিয়ে প্রস্তুত থাকতেন। যুদ্ধে প্লাটুনের ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

 

 

 

স্বাধীনতা উত্তর সময়ে তিনি গৌরীপুর কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। ১৯৭২ সালে ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের গৌরীপুর থানা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে গৌরীপুর থানা শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এবং হারুন পার্ক সংলগ্ন শ্রমিক ইউনিয়নের জায়গা বরাদ্দ নিয়ে শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। ১৯৮১ সালে গৌরীপুর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ দ্বিধাবিভক্ত হলে বাকশালে যোগ দিয়ে তিনি গৌরীপুর উপজেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

 

 

ভিপি ফজলুল হকের একমাত্র পুত্র রাজিবুল হক তাঁর পিতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের জন্য, সদা হাস্যেজ্বল, রসিকজন হিসেবে ছোট-বড় সবার মাঝেই ছিলেন জনপ্রিয়। চিরদিন গৌরীপুরের মানুষের মধ্যে অমর হয়ে থাকবেন।