সোয়াবিন তেলসহ নিত্যপন্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও শ্রমজীবি-নিম্নআয়ের মানুষদের আর্মিরেটে রেশন সরবরাহের দাবীতে আজ ১১মে, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন গাইবাান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন স্থানে পথসভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনু্ষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, জেলা সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের নেতা চপল সরকার, কৃষ্ণ চন্দ্র পাল, সবুজ মিয়া, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা সভাপতি অধ্যাপক রোকেয়া খাতুন, পারুল বেগম, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা আহবায়ক শামিমআরা মিনা।
বক্তাগন বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত। জনপ্রতিনিধিত্বহীন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সোয়াবিন তেলসহ নিত্যপন্যের মুল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। তারা এখন সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের পাহারাদার। মানুষ দেখছে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে শাসকশ্রেণি ও তাদের ঘনিষ্ঠরা টাকার পাহাড় বানাচ্ছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ দারিদ্র্য -বেকারত্ব-মূল্যবৃদ্ধির চাপে জর্জরিত। নিত্যপণ্যের মূল্য লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা। বাজার পুরোপুরি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। করোনা
পরিস্থিতিতে যথার্থ পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যর্থ সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। শ্রমিক-ক্ষেতমজুর-কৃষকসহ নিম্নআয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে বাধ্য হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বেশিরভাগ মানুষের নাগালের বাইরে। ওষুধ, পরীক্ষা ও কমিশন বাণিজ্যের নামে মানুষের বিপুল অংকের টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের মহোৎসব চলছে। করোনাকালে কর্মহীনতা আরও বেড়েছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত ও কর্মক্ষম বেকার যুবক নিদারুণ হতাশায় ভুগছে, এমনকি অনেকে আত্মহত্যাও করছে। অথচ সরকার করোনার মধ্যেই দেশের ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল, ৯টি চিনিকল বন্ধ করে দিয়েছে।
তথাকথিত দাতাগোষ্ঠীর পরামর্শে সরকার শূন্যপদে নিয়োগ দিচ্ছেনা এবং নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রও তৈরি করছেনা। সরকারের নতজানু নীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ অনেক বিষয় সুরাহা করা যায়নি। মাদক-জুয়া, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি, নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণসহ সামাজিক অনাচার মহামারি রূপ ধারণ করেছে। জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে দলীয় বাহিনী এবং পুলিশ দিয়ে হামলা করছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালো আইনে মামলা দিয়ে, হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন পাকাপোক্ত করে চলেছে। দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী করেছে ধনীক শ্রেনীর রাজনৈতিক দলগুলো, যারা কখনো একক কখনো জোটবদ্ধভাবে বিগতসময়ে দেশ শাসন করেছে এবং করছে। ফলে এদের বিপরীতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তাই আসুন দেশের এই গভীর সংকটকালে ঐক্যবদ্ধ হই এবং লড়াই-সংগ্রাম গড়ে তুলি।