নাদিম আহমেদ অনিক,স্টাফ রিপোর্টার-
নওগাঁয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হিজাব নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে (১৫ এপ্রিল) শুক্রবার প্রধান আসামিসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কিউএম সাঈদ টিটো (৬০) ও কুশার সেন্টার এলাকার কাজী সামসুজ্জোহা মিলন (৪৫)।
হিজাব বিতর্ক ঘটনায় পরিপেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও নওগাঁর পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদসহ অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার লাইব্রেরীপট্টি ও উপজেলার কুশারসেন্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী ফেসবুকে “হিজাব পরায়” পিটুনির অভিযোগ এনে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করে। এরপর আরও কিছু ভিডিও আসে। পাশাপাশি বেশ কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
মেয়েদের অভিযোগের পর তোলপাড়ের মধ্যেই ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্কুলটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আসলে কী ঘটেছিল, তা বের করতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। দায়িত্ব দেওয়া হয়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আরিফ প্রামাণিক এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে। সোমবার রাত ৮টার দিকে তদন্ত কমিটি মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমানের কাছে সেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড্রেস না পড়ে স্কুলে আসার কারণে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষক বেত্রাঘাত করেন। তাদের মধ্যে হিন্দু ছাত্রী ও ছেলে শিক্ষার্থীও ছিল। হিজাব পরার কারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে, এমন তথ্য তদন্তে পাওয়া যায়নি।”
এদিকে, শুক্রবার নওগাঁ জেলা শহরের মুক্তির মোড়ে নওগাঁর স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ এর আয়োজনে 'আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এসময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি চক্র বারবার বিভিন্নভাবে উস্কানিমূলক কথা বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এই চক্র এখনও সক্রিয় রয়েছে। এই কুচক্রী মহলের ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ানোর এখন বড় হাতিয়ার হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এ দেশের সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষকে মুসলিম বিদ্বেষী করে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ধর্মকে ব্যবহার করে যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদেরকে রুখতে হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]