প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ৩০, ২০২৪, ১:৫১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১০, ২০২২, ১:৩৫ পি.এম
উল্লাপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাজুক অবস্থা, নিয়ম মানেন না অধিকাংশ শিক্ষক
রিয়াজ আহমেদ হান্নান, উল্লাপাড়া থেকেঃ
সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার বারোটা বাজার পথে। শিক্ষক- শিক্ষিকার নিয়মশৃঙ্খলের খাটতি অনেক। করোনাভাইরাসের দীর্ঘ ছুটির পর ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়েছে বিদ্যালয়গুলোর প্রাঙ্গণ। তবে ক্লাস শুরুর ঘণ্টা বাজার পরও শেণিকক্ষে যাচ্ছেন না কোনো শিক্ষক। শিক্ষকদের কেউ গল্পে মশগুল, কেউ অন্য সহকর্মীর চুল বেঁধে দিচ্ছেন, কেউবা তুলছেন উকুন। গত শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মগড়া চড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দবিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে এমনই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উজ্জল হোসেন।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে খোঁজ নিলে বেশিরভাগই মিলবে শিক্ষকদের অনিয়মিত, দূর্নীতি, ক্লাস ফাঁকি সহ নানান অনিয়ম। জানা গেছে, শ্রেণি শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে কচিকাঁচার দল বিদ্যালয়জুড়ে খেলাধুলা করে বেড়াচ্ছিল, তারা বড় অফিসার দেখেই দৌড়াদৌড়ি করে ফিরতে লাগলো শ্রেণিকক্ষে, কেওবা অবাক হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে। জিজ্ঞাসায় জানাল, স্যার-ম্যাডামরা তো এমনই করেন। অতঃপর বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসা সেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চক-ডাস্টার হাতে তুলে নিয়ে নিজেই শুরু করলেন পাঠদান। এদিকে মাত্র কিছুদিন আগে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার পর গত ৭ এপ্রিল ও ৯ এপ্রিল তিনি উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেন। ইতোমধ্যেই সবার প্রশংসায় ভাসছেন এই কর্মকর্তা। ইউএনও উজ্জল হোসেন জানান, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকেরও উপস্থিতি পাননি তিনি। বেলা ১০টা পর্যন্ত স্কুলগুলোতে অধিকাংশ শিক্ষক আসেন না।
উপজেলার রানীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি দেখতে পান, স্কুলের বারান্দায় এক শিক্ষিকার চুলের বেণি বেঁধে দিচ্ছেন অন্য একজন মহিলা। অন্য একটি স্কুলে এক শিক্ষিকাকে শিক্ষার্থীদের দ্বারা মাথার উকুন বেছে নিতে দেখেন তিনি। ইউএনও উজ্জল হোসেন বলেন, তিনি স্কুলে প্রবেশ করার পর বারান্দায় বসে থাকা শিক্ষকরা দ্রুত অফিস কক্ষে ঢুকে পড়েন। এমনকি দবিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাউকে না পেয়ে নিজেই পাঠদান করেন। তিনি বলেন, যেসব স্কুলে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা পাওয়া গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। অথচ এখানে স্কুলগুলো সেভাবে তদারকি করা হয় না। শিক্ষকদের মধ্যেও রয়েছে দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাব। আমি নিয়মিত স্কুলগুলো পরিদর্শনে যাবো। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আল মাহমুদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করেছেন এবং বেশ কিছু তথ্য আমাদের অবগত করেছেন। বিষয়গুলো খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের এহেন কর্মকাণ্ডে চিন্তিত অভিভাবকগণ সহ সচেতন মহল।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]
দৈনিক বাংলার আলো নিউজ জিএমএস বাংলার আলো গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।