রংপুরের মিঠাপুকুরে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী আত্মগোপনে যাওয়ার একদিন পরেই নিজে নিজেই ফিরে আসে। ঘটনার এক দিন আগে আত্মগোপনে থাকা ওই শিক্ষার্থী নিখোঁজ তার সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বেশ কয়েকটি আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে ঘটনার একদিন পর ওই শিক্ষার্থী উব্ধার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে এমন সংবাদ জানতে পেরে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় কয়েকজন সাংবাদিক। বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে
গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারেন, নিখোঁজ ওই ছাত্র অপহরণ নয় বরং ওয়াজ মাহফিলের টাকা নিয়ে নিজে নিজেই গাঁ-ঢাকা দিয়েছিলেন ওই ছাত্র। তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। তার শারীরিক অবস্থা জটিল নয় বলেও উল্লেখ্য করেন।
উপস্থিতি সাংবাদিকরা ঘটনার পূরো বিষয়টি জানার পর, মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে ফিরে আসার সিন্ধান্ত নেয়। তারা আসার পথে ওই ছাত্রের পরিবার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কয়েকজনের নাম দিয়ে তাদেরকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে বলেন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়া হচ্ছেনা বলে সংবাদ করতে বলেন। এতে অসম্মতি প্রকাশ করে অবস্থানরত সাংবাদিকরা চলে আসার সময় তাদের পথরোধ করা হয়।
সেখানে হাবীব আহসান (মন্ডল) নামে এক ব্যক্তি প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয় বহন করেন। সে সাংবাদিকদের নানাভাবে তার অকৌশল প্রকাশের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু সাংবাদিকরা তার কথায় সম্মতি না দিয়ে চলে আসতে চাইলে হাবিব আহসান মন্ডল মোবাইলে ধারনকৃত সমস্ত ডকুমেন্টস মুছে ফেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে সংবাদকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান।
সংবাদকর্মীরা চলে যাওয়ার পর, দৈনিক বাংলার আলোর মিঠাপুকুর প্রতিনিধি ও দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মিঠাপুকুর উপজেলা শাখার সভাপতি রুবেল হোসাইন সংগ্রামকে বিষয়টি জানালে, যেহেতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আগেই পোস্ট হয়েছিল। সেই ধারণায় সচেতনতামূলক পোস্ট হিসেবে মিথ্যা নাটক আর নিখোঁজ বিষয়ে সংবাদ করা হবেনা বলে তিনিসহ কয়েকজন সাংবাদিক ফেসবুকে পোষ্ট দেন। এরই সূত্র-ধরে অজ্ঞাত একটি নাম্বার -01719447673 ফোন দিয়ে র্যাব পরিচয়ে সাপ্তাহিক বার্তা বিচিত্রার মিঠাপুকুর প্রতিনিধি মোঃ রতন বাবু ও ডেইলী মর্নিং গ্লোরি পত্রিকার মিঠাপুকুর প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান রাকিবকে হুমকি দেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মিঠাপুকুর উপজেলা শাখার সভাপতিঃ রুবেল হোসাইন সংগ্রামকে অব্যাহত হুমকি দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক সমাজে তীব্র খোভ এবং সমালোচনা তৈরি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (Habib Ahsan Mondol)ফেসবুক আইডি থেকে সাংবাদিকদের নামে বিভিন্ন মানহানিকর পোস্ট করেন হাবিব আহসান মন্ডল নামে ঐ ব্যক্তি। এতে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মিঠাপুকুর উপজেলা শাখাসহ সকল সদস্যদের মানহানি করা হয়।
অভিযুক্ত হাবীব আহসান মন্ডলের বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, সে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধ মূল্যক কর্মাকান্ড করে এলাকা থেকে পলাতক ছিলো। এর আগেও মিঠাপুকুর সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি সংগঠনের নামে কয়েকলাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ নিয়েও তার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচারের দাবিতে পোস্ট হয়। তৎকালীন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নিজে ফেসবুকে প্রতিবাদ জানান। একের পর এক অপরাধ করে আসলেও সে অধরা এর কারণ জানতে চায় সচেতন মহল।
এদিকে সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মিঠাপুকুর উপজেলা শাখা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মিঠাপুকুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আমিরুল কবির সুজন। এছাড়াও সাংবাদিকদের নিয়ে মানহানিকর পোস্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে হুমকি দেয়ার প্রতিবাদে তাকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করার প্রস্তুতির কথাও জানিয়ে তিনি বলেন, জড়িত আহসান হাবিব মন্ডলকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় বিচারের ব্যবস্থা নাহলে সারাদেশে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে। সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।