আবুল কালাম আজাদ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইটভাটা গুলো রাস্তার দুই ধারে বসত বাড়ির পাশে স্থাপন করে চালাচ্ছে রমরমা ব্যাবসা। চলা চলের রাস্তা এখন ইটভাটার পেটে। অতিষ্ঠ পথচারী ও এলাকাবাসী।
উপজেলা উলিপুরে গুনাইগাছ হতে থেতরাই রোডে ৩ কিলো পশ্চিমে মিঠিপুর বাজারে (ভুতের বাজার) এর নিকটে রাস্তার ডানে ও বামে গড়ে উঠে দুটি ইটভাটা। যা প্রতিনিয়ত চালাচ্ছে রমরমা ব্যাবসা। রাস্তার দুই পাড়ে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে এসে পাহাড় সমান করে উঁচু করে রাখতেছে। যা এলাকার পরিবেশ ও পথচারীরা মারাত্নক হুমকির মুখে। তাতে করে রাস্তার দুই পাশ দখল করে নিয়েছে দুইটি ইটভাটা। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হয়ে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে সবসময় হু হু শব্দে চলে ট্রাক্টর। ট্রাক্টর চললে রাস্তায় দেখা যায় শুধু ধুলা আর ধুলা। যা রাস্তা চলাচল মানুষের নিশ্বাস নিতে হচ্ছে কষ্ট। বেড়ে যাচ্ছে শ্বাসকষ্ট রোগের। উপজেলা ভূমি অফিসের জরিপ অনুযায়ী উপজেলায় মোট ৩০টি ইট ভাটা রয়েছে। এরমধ্যে চালু আছে ২০টি বাকি ১০টি বন্ধ রয়েছে।
উলিপুর টু থেতরাই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত অটো রিক্সা সহ অন্যান্য যানবাহনে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। ইটভাটা সংলগ্ন রাস্তার বেহাল অবস্থা থাকায় অনেক পথচারীদের মনে অসন্তোষ বিরাজ করছে যা দেখার কেউনেই। পথচারী মোজাম্মেল, সামাদ, হাফিজুর, কালাম, জামাল সহ অনেকে বলেন ইটভাটা রাস্তার দুইধার দখল করে নিয়েছে রাস্তায় প্রচন্ড ধুলা আর ধুলা যখন ট্রাক্টর আসে তখন বালু ছাড়া কিছুই চোখে দেখিনা। যা পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শ্বাষকষ্ট রোগ দেখা দিচ্ছে এর প্রতিকার চাই।
মিঠিপুর বাজারের আশেপাশের গ্রামের কয়েকজন বলেন, চারিপাশে ধান ক্ষেত ও বসত ভিটে। ভিতরে ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। তারা আরো বলেন, ইট ভাটায় অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনে অনেক জমি পুড়ে গেছে। আবার অনেক জমিতে তেমন ফসল হয়নি। কৃষি জমি রক্ষায় দ্রুত ওই ই্টভাটাগুলো অপসরণ করা প্রয়োজন।
ইটভাটা সংলগ্ন এলাকাবাসী মেহের আলী, ময়জুদ্দি মন্ডল, ফুল মিয়া, মাহাবুব, কাকরু, সুবল, মুকুল, গনেস, সুদার্শন, নারু, নেপেন, ছবুর সহ আরও অনেকে জানান, ইটভাটা হওয়ার পর বিলে পানি থাকে না। মাছও তেমন পাওয়া যায় না। তাই এখন আমরা জমিতে বোরোর চাষ করছি। ভাটার ধোঁয়ায় সে আবাদও ভাল হয় না। আশ পাশের আম, জাম, কাঠাল, লিচু, সুপারি, নারিকেল গাছসহ অন্যান্য গাছ পালায় এর বিরুপ প্রভাব পড়েছে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা গ্রীণ ভয়েস এর জেলা সভাপতি নোমান খান জানান পরিবেশ নীতিমালা অনুযায়ী বিল, কৃষি জমি ও আবাসিক এলাকায় ভাটা করা যায় না। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছে না। একারণে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। ইটভাটায় প্রচুর ট্রাক ও ট্রাক্টর আসা-যাওয়া করে। এতে করে গ্রামীণ সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। ইটভাটার ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ আবাসন অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
উক্ত গুনাইগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মোকলেছুর রহমান বলেন এই ইউনিয়নে ৩ টি ইটভাটা আছে যা ঐ সব এলাকায় পরিবেশ দূষন করছে। মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমি এবং ফল ফলাদির গাছ। বিশেষ করে যে সকল ইটভাটা রাস্তা দখল করে আছে তাদেরকে বলতে হবে রাস্তার পাশে রাখা মাটি গুলো যেন অপসারণ করে দিয়ে পরিবেশ বজায় রাখে।
উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব সাইফুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনে কৃষি জমি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে আবাদি জমির ফসল কম হচ্ছে। ফল ফলাদি ও শাকসবজি হচ্ছেনা। সাধারণ কৃষকের অনেক সমস্যা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান ইটভাটা গুলোর কারণে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। রাস্তা ঘাট ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে বসত ভিটের মধ্যে ফল ফলাদির গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং কৃষি জমির উপর পভাব পড়ছে। আমারা তদারকি করে ব্যাবস্থা গ্রহন করব।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]