বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির নলছিটি জেড এ ভুট্টো ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদার ৫আগস্ট ক্ষমতার প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকেই আত্মগাপন। কলেজের একাডেমীক ও প্রশাসনিক কোন কাজেই তাকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কোনভাবেই পাওয়া যায়নি। গোপন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শুধু বেতন শীট স্বাক্ষর করেছেন। দুই মাস পর ৬ অক্টোবর রবিবার সকালে হঠাৎ তিনি কলেজে হাজির হন। তিনি কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার পুনরায় আসীন হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নলছিটি জেডএ ভুট্টা ডিগ্রি কলেজের দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। গত ৫আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর থেকে কলেজের যাবতীয় কার্যক্রমে অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী ছিলেন আত্মগাপনে। দুই মাস কলেজের কোন কাজে তাকে পাওয়া যায়নি। ৬সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় সুবিধাভোগী কিছু লোকজনের ছত্রছায়ায় তিনি কলেজে হঠাৎ এসে উপস্থিত হয়েছে।
প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে অংশ নেয়া অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বিভিন্ন অভিযাগ মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন দপ্তরে দেওয়া হয়েছিল বলে স্থানীয়রা জানান। কি তৎকালীন প্রভাবশালী নতা আমির হোসেন আমু’র হস্তক্ষেপে তদন্ত ও কার্যকরী পদক্ষেপের বিপদ থেকে রক্ষা পান। তার বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচীও পালন করছিলেন।
এলাকার মানুষের প্রশ্ন- যিনি কলেজের লেখাপড়ার মান নষ্ট করেছেন, নকল বাণিজ্যের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে ইনকাম করেছেন এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অনেক গুলো নিয়োগ আওয়ামীলীগের লোকদের দিয়ে দলীয় করণ করেছেন। এত অনিয়ম দুর্নীতি ও দলীয়করণ করার পরও তিনি কিভাবে আবার স্বপদে বহাল হলেন।
এ ছাড়াও গত ৫ আগস্ট এর পর এই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল করে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। তারপরও কিভাবে তিনি অত্র কলেজে আসেন প্রশ্ন সকল মহলের।
জানা গেছে, প্রভাবশালী কিছু স্থানীয় নেতাদেরকে টাকার বিনিময় ম্যানেজ করে তিনি স্বপদে বহাল আছেন।
এ বিষয় বিএনপির একাধিক নেতার কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা এ বিষয় কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অনেকেই বিষয়টি জানেন না বলে অবহিত করেন।
এলাকার প্রবীণ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আইউব আলী আবার অধ্যক্ষর দায়িত্ব নিয়ে কলেজে অনুপ্রবেশ করায় সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় আশংকা দেখা দিতে পারে। তার বিরুদ্ধে হঠাৎ যেকোনো কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
এবিষয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কলেজ অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদার জানান, ১৯৯৪ সালে প্রভাষক হিসেবে কলেজে চাকুরীতে যোগদান করি। ২০১৩সালে অধ্যক্ষর দায়িত্ব গ্রহণ করি। প্রতিদিন কলেজ অধ্যক্ষর কাজ থাকে না, কলেজের বাইরেও অফিসিয়াল কিছু কাজ থাকে। শিক্ষকদের উপস্থিতি আর অধ্যক্ষর উপস্থিতির হিসাব এক না। তাই ৫আগস্ট থেকে কলেজে অনুপস্থিতের বিষয়টা সঠিক না, কলেজের ডকুমেন্টরিতে সব ঠিক আছে। অন্যসব উত্থাপিত অভিযাগ মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি। কলেজে উপস্থিতি এবং ডকুমটরীর বিষয় কেরানি আপনার নিয়োগাধীন তাকে দিয়ে সব কাজ ঠিক করিয়ে রাখতেই পারেন?
এমন প্রশ্নে তিনি “বরিশাল চায়ের দাওয়াত দেন। চায়ের দাওয়াত বরিশাল কেন, দাওয়াত দিল আপনার কলেজে দিবেন” এমন কথায় তিনি অট্টহাসি দিয়ে ফোন কেটে দেন।