সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
সারাদেশে সনাতন ধর্মালম্বীদের উপর হামলা, হত্যা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে আগুন,ও মন্দির ভাঙ্গার প্রতিবাদে এবং ৮ দফার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে নরসিংদীর সনাতন ধর্মাবলম্বীর নাগরিকরা।
রবিবার (১১ আগষ্ট) বিকেলে নরসিংদীর পৌর শহরের ভাগবত (দয়াময়) আশ্রমের সামনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদীর বিভিন্ন স্থান থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে প্রতিবাদ সভাস্থলে জড়ো হতে থাকে। সভাস্থলে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ একত্রিত হয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। একপর্যায়ে লোকসমাগম সভাস্থল ছাড়িয়ে দক্ষিণে নরসিংদীর স্বাধীনতা চত্বর ও উত্তরে হেমেন্দ্র সাহার মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
এসময় বিক্ষোভকারীরা শহরের ব্যস্ততম রাস্তার দু’পাশে অবস্থান নেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বিক্ষোভকারীরা তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি, ‘হিন্দুদের ওপর হামলা কেন, জবাব চাই, জবাব চাই’, ‘আমার মাটি আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’সহ নানা শ্লোগানে উত্তাল হয়ে করে তোলে প্রতিবাদস্থল।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় আগত হিন্দু নেতৃবৃন্দ বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা এবং মন্দির ভাংচুর বন্ধ করতে দ্রুত সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বরাবরের মতোই সরকার পরিবর্তনের পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর অত্যাচার -নির্যাতন শুরু হয়েছে। মন্দির ভাংচুর হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে এ হামলা বন্ধ করার আহবান জানানো হলেও তা বন্ধের কোন কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও দাবী করেন তারা। এছাড়াও সভাস্থল থেকে তাদের ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
২. অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা।
৪. হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে, পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা।
৫. দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৬. প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা।
৭. সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করা।
৮. শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি দেয়া।
এসময় পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট ও ইসকন এর জেলা ও শহরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।