মোস্তফা মিয়া পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি;
আবু সাঈদ (২৪) পরিবারের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সন্তান বাবা মায়ের। নিজের ইচ্ছায় ৯ ভাই বোনের মধ্যে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন তিনি। অভাবের কারণে অন্য সন্তানদের লেখাপড়া করাতে না পারলেও সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।
আজ মঙ্গলবার(১৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। আবু সাইদ পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছোট ছেলে।
জানা গেছে, দুপুরে বেরোবির কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যায়। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সংঘর্ষে তিনি নিহত হন।
নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়েছে। তিনি কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেচে থাকলে হামার হেরে স্বপ্ন পুরুন হলো হয়। ও ভাইও হামাক এনা বোন কয়া ডাকো রে।
প্রতিবেশি এক ভাবী বলেন, ওর বাবা দিন মজুর হওয়ায় লেখাপড়ার টাকা বহন করতে সক্ষম না হওয়ায় অভাবের কারণে আমার ছেলের লেখাপড়ার সরঞ্জমাদী ও পোশাক ব্যবহার করে লেখাপড়া চালিয়েছে। সে এক জন মেধাবী ছাত্র হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিল। ও ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতো।
মা মনোয়ারা নির্বাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে সবার দিয়ে চেয়ে আছে। মাঝে মাঝে বাবা বাবা বলে ডাকছে। বাবা মকবুল হোসেনের কন্ঠে কোন কথা নেই । তিনিও সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আবু সাঈদ। সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকা শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আনোয়ারুল ইসলাস বলেন, আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সতর্ক অবস্থানে আছি যেন বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা কেউ না করে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]