সিরাজুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ অপার সৌন্দর্যে ভরপুর যেমনি রয়েছে তার রুপ ও বৈচিত্র্য তেমনি পাখিদের সমাগম তাই তো কবি বলেছেন, বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে।” কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী ‘স্বাধীনতার সুখ’ ছড়াটি ইংরেজী মাধ্যমে পড়ুয়া শিশুদের কাছে অপরিচিত লাগলেও বাংলা মাধ্যমের ৩য় শ্রেণির বাংলা বইয়ের পাঠ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত গ্রাম বাংলার এই নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকেল উপজেলার রাউতনগর, এবং হরিপুর উপজেলার টেংরিয়া গ্রামে তাল, ও নারিকেল গাছে এক সময় বাবুই পাখি প্রচুর বাসা বেঁধে বসবাস করত। ফুঁটিয়ে তুলত শৈল্পিক নিদর্শন। বাবুই পাখির কিচির মিচির শব্দ আর তাদের শৈল্পিক বাসা মানুষকে পুলকিত করত।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এই শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে চমৎকার বাসা তৈরি করতো বাবুই পাখিরা। সে বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়ে বাতাসে টিকে থাকে তাদের বাসা। বাবুই পাখি শক্ত বুননের এ বাসা টেনেও ছেঁড়া কঠিন। বর্তমানে এ এলাকা থেকে ঐ জাতীয় গাছ হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে হারিয়ে গেছে বাবুই পাখিও।
একটা সময় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর তালগাছ ও নারকেল গাছে ব্যাপক বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পরেনা। জেলায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ছোট্ট সেই বাবুই পাখিটি। বাবুই পাখির এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক যোগাত এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করত।
গাছে ঝুরির মত চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি জগৎ জুড়ে। এ জন্য অনেকেই একে তাঁতি পাখিও বলে থাকেন। সারা বিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১১৭। তবে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখি বসবাস করে।
ছোট্ট এই বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, রাতের বেলায় তাদের ঘর আলোকিত করার জন্য জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে ঘরে রাখে এবং সকাল হলে আবার তাদের ছেড়ে দেয়। প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী পাখির গায়ে কালো কালো দাগসহ পিঠ হয় তামাটে বর্ণের। তবে প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখির রং হয় গাঢ় বাদামী। বাবুই পাখি সাধারণত তালগাছ ওনারকেল গাছেই বাসা বাঁধে। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার।পাখি প্রেমিক শিক্ষক মসলিম উদ্দীন জানান, পাখিদের বাস যোগ্য আবাস স্থল রক্ষায় আমাদের অবশ্যই গাছপালা নিধন থেকে বিরত থাকতে হবে হবে সমাজে এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]