মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের খানসামায় সবধরনের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়ে থাকে। গত বছরের ন্যায় এবারও রবিশষ্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এ অঞ্চলের মাটির গুনাগুন, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে উপজেলায় এর চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৩০ জন কৃষক ৩০ বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করছে। এতে সূর্যমুখী ফুল চাষ অপার সম্ভবনা থাকায় কৃৃৃৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায, উপজেলার আঙ্গারপাড়া, ভান্ডারদহ, গোবিন্দপুর, ছাতিয়ানগড়, আগ্রা, মারগাও গ্রামে ধান, ভূট্টা, গমের আবাদের সাথে এবারও নতুন করে যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে আসছে দর্শনার্থীরাও।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৩০ বিঘা জমিতে ৩০ জন কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এর আবাদ শুরু করেছেন। উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক সরিফুল ইসলাম জানান, কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে খরচ বাদে বিঘা প্রতি আয় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যাবে।
একই এলাকার সূর্যমুখী ফুল চাষী হুমায়ুন কবির জানান, ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয় কিন্তু সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। যে কারণে আগামীতে অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবে। সূর্যমুখীর কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে। যা থেকে বাড়তি একটা লাভ মিলবে। তাছাড়া এটি চাষে তেমন কোন ঝামেলা নেই। শুধুমাত্র দুটি সেচ দিলে এবং ফুলগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করলেই হলো। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম. জাহেদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। প্রতি বছর ১৪ থেকে ২০ লক্ষ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। যে কারণে আমাদের দেশের প্রচুর পরিমাণ মুদ্রা বিদেশে চলে যায়।
বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সেটি নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে। আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই প্লটগুলো পর্যবেক্ষণ করছি ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি শরীরের কোলেস্টেরল ঠিক রাখে। কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানি সরাসরি এর বীজ কিনে নিবেন। কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্ত:সর্ম্পক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষকরা এটি কোথায় বিক্রি করবে সেটি নিয়ে চিন্তার কোন কারণ থাকবেনা। আগামীতে এর চাষ আরো বাড়বে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ক্যাপশন: খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সূর্যমুখী ফুল ক্ষেত তোলা ছবি।
প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা শাওন ০১৭১১-০০৬২১৪, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক 01762119992, প্রধান কার্যালয় ৩৪ নুরজাহান শরীফ প্লাজা ৮ম তলা, পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০। ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০ নিউজ ই-মেইল [email protected] সিভি পাঠান: [email protected]