র্যাব ফোর্সেস আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে এবং সন্মানিত নাগরিকদের জন্য টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের আলোকে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবত পালিয়ে থাকা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জনগনের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে আসছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী ডলি খাতুন ভিকটিম সিরাজুল ইসলাম স্ত্রী ছিলেন, এবং তাদের সংসারে দুইটি সন্তানও ছিল। আসামী ডলি খাতুন এর সাথে তার স্বামী সিরাজুল ইসলামের সাংসারিক অশান্তি সহ প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। এমনকি আসামী ডলি খাতুন তার স্বামীকে প্রায়ই মারধর করতো বলে জানা যায়। গত ইং ২২/০৮/২০১১ তারিখে ভিকটিম সিরাজুল ইসলাম জানতে পারে তার স্ত্রী ডলি খাতুনের সাথে একই এলাকার নূর ইসলাম @ বাবু (৪৪) এর অবৈধ সম্পর্ক আছে। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রী ডলিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দুজনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয় এবং একপর্যায়ে আসামী ডলি তার স্বামী সিরাজুলকে মারধর করে। পরবর্তীতে ইং ২৪/০৮/২০১১ তারিখে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডলি খাতুন তার পরকীয়া প্রেমিক নুর ইসলাম @ বাবু (৪৪) এর সহযোগীতায় গভীর রাতে শ্বাসরোধ করে সিরাজুল ইসলাম’কে হত্যা করে। এ সময় সিরাজুল ইসলাম চিৎকার করলে প্রতিবেশী মুস্তাক, তার স্ত্রী ও তার মাকে নিয়ে সিরাজুলের বাড়িতে গিয়ে সিরাজুলের খোঁজ করলে, ডলি জানায় সিরাজুল গোসলে গেছে। তখন তারা পাশের পুকুরে গিয়ে সিরাজুল ইসলামের মৃত লাশ দেখতে পায় এবং বুঝতে পারে যে, ডলি খাতুন তার পরকীয়া প্রেমিক নুর ইসলাম @ বাবুর সহযোগীতায় সিরাজুলকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় ডলি খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক নুর ইসলাম @ বাবুর সহ অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে আসামী করে একটি হত্যা দায়ের করে। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী ডলি খাতুন (৪০) ও নূর ইসলাম @ বাবু (৪৪) উভয়ের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় ইং ১৭/০৫/২০২৩ তারিখ বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে আমৃত্যু কারাদন্ড সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। উক্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের গোয়েন্দা দল আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬,যশোর ক্যাম্প ও র্যাব-২, সিপিসি-১, ধানমন্ডির একটি যৌথ আভিযানিক দল ইং গত ১২/১০/২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ডিএমপি, ঢাকার মতিঝিল থানাধীন ফকিরাপুল ২৩০ গরম পানির গলি এলাকায় আত্মগোপনে আছে। সংবাদ প্রাপ্ত হয়েই আভিযানিক দলটি তাৎক্ষণিক উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে একই তারিখ রাতে আসামী ডলি খাতুন (৪০), স্বামীঃ মৃতঃ শেখ সিরাজুল ইসলাম শেখ, সাং- জয়পুর, থানা- মনিরামপুর, জেলা- যশোর, এ/পি পিতাঃ মৃত ইন্তাজ উদ্দীন, সাং- আড়পাড়া, থানা- কোতয়ালী, জেলা- যশোর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। উল্লেখ্য, আসামী নূর ইসলাম @ বাবু (৪৪) পূর্বেই আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।