মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু ,
উপজেলা প্রতিনিধি বদলগাছী, (নওগাঁ)।
নওগাঁর বদলগাছীর সোহাসা গ্রামে গত কয়েক বছর যাবত উচু কৃষি জমিতে পানি দিয়ে চাষাবাদ করা খুব কষ্টকর ছিলো ,কৃষকেরা ফসলের জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে অনেক ভোগান্তির মধ্যে ছিলেন।
এমতাবস্থায় কয়েকশত কৃষকের কথা চিন্তা করে উপজেলার সোহাসা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক মিজানুর রহমানের প্রচেষ্টায় ওই এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে কৃষকদের উচু জমিতে ফসল ফলাতে মিনি সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি দেওয়া শুরু করেন। এতেকরে স্থানীয় কৃষকেরা ফসলি উচু জমিতে পানি পেয়ে ফসল ফলাতে পেরে দারুণ খুশি।
তথ্য সংগ্রহ কালে জানাযায়, আগে শুষ্ক মৌসুমে উচু ফসলি জমিতে পানি না দেওয়ার কারনে চাষাবাদ করা খুব কষ্টকর ছিলো, এবং অনেক লোকসান গুনতে হতো কৃষকদের । মিজানুর রহমান মিনি সেচ পাম্প চালু করার পরও শুস্ক মৌসুমে উচু জমিতে পানি পেয়ে ফসল ফলাতে পেরে দারুন উচ্ছ্বাসিত সোহাসার কৃষকগন।
মিজানুর রহমানের সেচে পাম্পের মাধ্যমে নিদিষ্ট এরিয়ার মধ্যে মেইন ক্যানেল, সেকেন্ডারি ক্যানেল, টারশিয়ারি ক্যানেলের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করছেন, একারনে শুষ্ক মৌসুমে ৪০০ থেকে ৫০০জন কৃষক সরাসরি সেচ সুবিধা পাবেন এবং চলতি রোপা মৌসুমে কৃষকেরা ধারনা করছেন ১০০ থেকে ১৩০ বিঘা জমিতে কৃষক ফসল চাষ করতে পারবেন।
স্থানীয় কৃষক রাজা বাবু বলেন, এই একটি মিনি সেচ পাম্পের পানিতে আমরা ভুট্টা,পেঁয়াজ,আলু, পটল,সরিষা, পাট, বেগুন, ধান সহ বিভিন্ন চাষবাদের উপযুক্ত জমিতে পানি পেয়ে সুষ্ঠুভাবে চাষ করছি এবং অনেক উপকার ভোগ করছি । আগে আমরা উচু জমিতে পানি তুলতে পারতাম না, অনেক টাকা খরচ করা লাগতো। এখন অনেক কম খরচে উচু জমিতে,আমরা চাষাবাদ করতেছি সেই সাথে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলছি।
স্থানীয় কৃষক মোঃ রসূল বলেন, এই মিজানুর রহমানের মিনি সেচ পাম্পের লাইসেন্স নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছেন যাতে করে মিজানুর রহমান উপজেলার বরেন্দ্র বহুমুখী অফিস থেকে মিনি সেচ পাম্পের লাইসেন্স না পায়।
এমতবস্থায় বদলগাছী উপজেলার সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন, আমরা সাধারণ কৃষকের কথা চিন্তা করে এই মিজানুর রহমান ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে নিদিষ্ট এরিয়ার মধ্যের জমিতে পানি সরবরাহ করছেন, যার ফলশ্রুতিতে আমরা চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছি, আপনার সুদৃষ্টিতে আমাদের অসহায় গরীবদের কথা চিন্তা করে মিজানুর রহমানের নামে মিনি সেচ পাম্প টির লাইসেন্স অনুমোদন করে দিয়ে আমাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করবেন বলে আমরা সাধারন কৃষক আশাবাদী।
এবিষয়ে মিনি সেচ পাম্পের মালিক মিজানুর রহমান বলেন চলতি মৌসুমে আমার সেচ পাম্প এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা দিতে প্রস্তুত।শুধু বরেন্দ্র বহুমুখী অফিস থেকে লাইসেন্সের অনুমোদন হাতে পাওয়ার পর সাধারণ কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্য সেচ সুবিধা দিতে পারবো। আমি মনে করি কৃষক বাঁচলে বাচঁবে দেশ। এই কৃষকের কথা চিন্তা করে আমি আমার উদ্যোগ টি চালু করেছি এবং সকল কৃষক আমার সাথে আছে। তাদের কে সাথে নিয়ে আমি আমার মিনি সেচ পাম্পটির মাধ্যমে কৃষকদের সেবা দিতে প্রস্তুত থাকবো ইনশাআল্লাহ।
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী বলেন, গত কয়েক মাস আগে উপজেলা সেচ কমিটি বরাবর মিজানুর রহমানের নামে একজন কৃষক STW পাম্পের লাইসেন্স অনুমোদন এর জন্য আবেদন করছিলেন। আবেদন পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করে উপজেলা সেচ কমিটির কাছে রিপোর্ট পেশ করেছি, মিজানুর রহমান নামে কৃষক লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য,যেহেতু মিজানুর রহমান ৮থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে বোরিং করছেন বরেন্দ্রের নীতিমালা অনুসরণ করে পাইপের মাধ্যমে তার নিদ্দিষ্ট সীমানার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কৃষকদের মাঝে সেচ সু্বিধা দিচ্ছেন। এমতঅবস্থায় মিজানুর রহমানের নামে আবেদন টি সকল দিক থেকে লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য বলে আমরা মনে করছি।
আমরা সবোর্চ্চ চেষ্টা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল যোগ্যতা সম্পন্ন আবেদনকারীদের হাতে লাইসেন্স তুলে দিতে পারবো।