বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র্যাবের অভিযানে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা হতে চাঞ্চল্যকর আয়নাবাজ সোহাগের অন্যতম সহযোগী কদমতলীর টিটু হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত প্রায় এক দশক যাবত পলাতক আসামী রবিন শেখ গ্রেফতার।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
পূর্ব শত্রæতার জের ধরে একদল দুর্বৃত্ত পরিকল্পিতভাবে গত ২৬/১১/২০১০ খ্রিঃ তারিখ হুমায়ুন কবির @ টিটু’কে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। গুলি ভিকটিম টিটু-র মাথার ডান পার্শ্বে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। আহত টিটু’কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৯ তাং-২৬/১১/২০১০ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। এই মামলায় ১। সোহাগ @ বড় সোহাগ (৩৪), ২। মামুন (৩৩) ও ৩। মোঃ রবিন শেখ (৩০) সহ অজ্ঞাতনামা ঃ আরো ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়।
রবিন শেখ বিগত ২০১০ সালে টিটু হত্যা মামলার ০৩ নং আসামী হিসেবে গ্রেফতার হয় এবং ২০১২ সালে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করে বলে জানা যায়। সে জামিন লাভ করার পর থেকে পলাতক রয়েছে। গত ২৮/১২/২০১৭ খ্রিঃ তারিখ উক্ত মামলার ০৩ নং আসামী রবিন শেখ এর অনুপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালত রায় প্রকাশ করেন। বিজ্ঞ আদালত রবিন শেখ (৩০) এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। কিন্তু রবিন ২০১২ সালে জামিন লাভের পর হতে অদ্যাবধি পর্যন্ত আত্মগোপনে ছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৪/০৬/২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ০১:০০ ঘটিকা হতে ভোর ০৪:০০ ঘটিকা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন বরাবো এলাকা হতে আয়নাবাজ সোহাগের অন্যতম সহযোগী ও টিটু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ১০ বছর যাবৎ পলাতক আসামী মোঃ রবিন শেখ (৩০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রবিন উক্ত হত্যাকান্ডের সময় নবাবপুর এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। ২০১২ সালে জামিনে মুক্তি লাভের পর সে নিজেকে লুকিয়ে রাখার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেছে। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন বরাবো এলাকায় অটো-ড্রাইভার সেঁজে আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত নিজেকে আত্মগোপন করে রেখেছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, আসামী রবিন ও আয়নাবাজ সোহাগ একই এলাকায় পাশাপাশি বাসায় বসবাস করত। সেই সুবাদে রবিন এর সাথে মামুন ও সোহাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। যার ফলে রবিন সোহাগের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করত বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য র্যাব-১০ উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ০১ নং আসামী আয়নাবাজ সোহাগ’কে গত ২৯/০১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল মিডফোর্ড হাসপাতাল এলাকা হতে, ০২ নং পলাতক আসামী মামুন’কে গত ১০/০৩/২০২২ খ্রিঃ তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনা ঘাট এলাকা হতে এবং ০৩ নং পলাতক আসামী রবিন’কে অদ্য ২৪/০৬/২০২২ খ্রিঃ তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন বরাবো এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উক্ত হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত (যাবজ্জীবন কারাদন্ড) সকল আসামীদের র্যাব-১০ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মেজর শাহরিয়ার জিয়াউর রহমান,
পিপিএম, পিএসসি
উপ-অধিনায়ক
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০
ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
তারিখঃ- ২৪/০৬/২০২২ খ্রিঃ