নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার হত্যা মামলার আসামি নোয়ান্নাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আশরাফুল করিম বাবু (৩৪)’কে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে র্যাব-১০ ও র্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার।
গত ২৮/০২/২০১৩ খ্রিঃ তারিখ বি.এন.পি.-জামায়েতের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানাধীন দত্তেরহাট দত্তের বাড়ীর মোড় এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্যে জমায়েত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে নোয়ান্নাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এর সাবেক আহবায়ক আশ্রাফুল করিম @ বাবু (৩৪)সহ ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের অসংখ্য সন্ত্রাসী দা, ছেনী, লোহার রড, লাঠি-সোটা, আগ্নেয়াস্ত্র, পাইপ গান, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জমায়েতকৃত বি.এন.পি.-জামায়েতের নেতাকর্মীদের উপর এলোপাথাড়ি আক্রমন শুরু করে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র তাণ্ডবে বি.এন.পি.-জামায়েতের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ বাদ পড়েনি শিশু ও নারীসহ সাধারণ পথচারী।
ঐদিন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক বিভিন্ন দোকান ভাংচুর, লুটপাট, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া, ককটেল বিস্ফোরন এবং এলোপাথাড়ি গুলির শব্দে সাধারণ মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচিতে উল্লেখিত এলাকার বাসিন্দা মজিবল হক (৫৫) দিগ্-বিদিক ছোটাছোটি করার একপর্যায়ে দেখতে পায় দত্তের হাট পুলের কাছে একটি রাস্তায় মজিবলের ছেলে ট্রাক ও টাংকলরী শ্রমিক মোঃ খোকন (১৭) এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় পড়ে আছে। মজিবল তড়িৎ তার ছেলেকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ নেতা বাবুসহ অন্যান্য আসামীরা ভিকটিম খোকনকে মজিবলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অতঃপর খোকনকে মৃত ভেবে তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি ময়লাযুক্ত খালে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে।
পরবর্তীতে মজিবল স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় তার ছেলে ভিকটিম খোকনকে গুরুতর ও রক্তাক্ত আহত অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক খোকনকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত হত্যাকান্ডের পর মৃত খোকনের বাবা মজিবল বাদী হয়ে নোয়াখালী জেলার সুধারাম মেডল থানায় খোকনকে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত বাবুসহ ৫৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩/৩৯০ তারিখ-০৮/০৯/২০২৪ খ্রি.; ধারা-১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০; তৎসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইন ১৯০৮ এর ৩/৬। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল।
উক্ত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র তাণ্ডবে সাধারণ পথচারী ট্রাক ও টাংকলরী শ্রমিক মোঃ খোকনকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ২০:৪০ ঘটিকায় র্যাব-১১ ও র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানিক দল ডিএমপি ঢাকার নিউ মার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানাধীন এলাকায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে পথচারী ট্রাক ও টাংকলরী শ্রমিক খোকনকে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত মামলার এহাজারনামীয় পলাতক আসামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম মডেল থানার নোয়ান্নাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আশ্রাফুল করিম @ বাবু (৩৪), পিতা-মৃত আজিজুল হক, সাং-রতনপুর, থানা-সুধারাম মডেল, জেলা-নোয়াখালী’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।