ফাহাদ মোল্লা:
খাদ্যে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জে আবারও ভোক্তা অধিদপ্তরের তৎপরতা দেখা গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মুন্সীগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে সদর উপজেলার মানিকপুর এলাকায় বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বেকিং টুলবক্স’ নামক কেক তৈরির উপাদান বিক্রির একটি দোকানে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ কেক মিক্স, চকলেট ফ্লেভার, ফুড কালারসহ নানা ধরনের উপকরণ দোকানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ এই পণ্যগুলো গ্রাহকের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে উল্লেখ করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
ফলে দোকানের মালিক আব্দুর রহমানকে ৭,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তাকে সতর্ক করে ভবিষ্যতে আর কখনও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ বা বিক্রির জন্য প্রদর্শন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানান হয়, নিয়ম ভঙ্গ করলে পরবর্তীতে আরও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মুন্সীগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ।
সহযোগিতা করেন, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা এ বি এম মিজানুল হক এবং ব্যাটালিয়ন আনসার মুন্সীগঞ্জের একটি বিশেষ টিম। পুরো অভিযানের সময় বাজার এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাধারণ ক্রেতাদেরও বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা হয়।
‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’ অনুযায়ী, কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মেয়াদোত্তীর্ণ বা ক্ষতিকর পণ্য বিক্রির জন্য প্রদর্শন বা সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ক্ষেত্রে জরিমানা বা কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যসচেতন সমাজ গঠনে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ জানান, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় আমরা নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং করছি। ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন সবসময় পণ্যের মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ, দাম ও মান যাচাই করে কেনাকাটা করেন। কোনো অনিয়ম চোখে পড়লে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে দ্বিধা করবেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বাজারে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্যের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মুন্সীগঞ্জে আজকের এ অভিযান ভোক্তাদের আস্থার জায়গা তৈরি করবে এবং ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক করবে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।