মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মো. নাসির উদ্দিন আহম্মেদ (৬৮) নামে এক এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষককে হত্যার অভিযোগে রিয়াজ উদ্দিন নামে তার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ হত্যার ঘটনায় নিহত ওই স্কুল শিক্ষকের বোন মাসুমা পারভীন এর দায়ের করা মামলায় মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ শনিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ছেলে রিয়াজ উদ্দিনকে গ্রেফতার।
পুলিশ আজ রবিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমাণ্ডের আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ জানায়। নিহত স্কুল শিককের বোনের দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে ছেলে রিয়াজ উদ্দিন বেপরোয়া জীবনযাপন শুরু করে এবং মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।
এ কারণে শিক্ষক বাবা নাসির উদ্দিন প্রায়ই তাকে বাধা দিতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রিয়াজ বাবার কাছে বারবার ভোগদখলীয় সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দাবি কওে আসছিলো। জমি বিক্রি করে টাকা না দেয়ায় তিনি বাবার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন। সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে গত ১২ থেকে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে যেকোনো সময় বাবাকে হ'ত্যা করে লাশ মঠবাড়িয়া পৌরশহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠের মঞ্চের কাছে ফেলে রাখে।
গত ১৩ জুলাই রবিবার বিকাল চারটার দিকে শহরের কে. এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠের সভামঞ্চের ওপর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিক্ষক নাসির উদ্দিন মঠবাড়িয়া কে.এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শারিরীক অসুস্থতার জন্য ২০১৪ সালের ৩১ মে স্বেচ্ছায় শিক্ষকতায় অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি উপজেলার গুলিসাখালী ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত আবুল হাশেম হাওলাদার এর ছেলে। নিহত স্কুল শিক্ষকের ছোট ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন সাবেক বিআরডিবির মহা পরিচালক ছিলেন।
থানা ও স্থানীয়, শনিবার ওই স্কুল শিক্ষক গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে শহরের ব্যাংক কলেনীর শেরে বাংলা পাঠাগার সংলগ্ন নিজ বাসা থেকে বের হন। এরপর আর তিনি বাসায় ফিরে আসেননি। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ছেলে রিয়াজ উদ্দিন মঠবাড়িয়া থানায় শনিবার দিনগত রাতে একটি সাধারন ডায়রি করেন।
এরপর তার সন্ধান চেয়ে পরিবারের স্বজনরা শহরে মাইকিং করেন। আজ রবিবার বিকাল চারটার দিকে স্থানীয়রা খেলার মাঠের সভামঞ্চে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থালে এসে তার লাশ উদ্ধার। এ সময় তার থেতলানো মাথা থেকে রক্ত ঝড়ছিলো। স্কুল শিক্ষকের এমন মৃত্যু রহস্যজনক বলে এলকাবাসির ধারনা।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্কুল মাঠের সভামঞ্চ থেকে ওই স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তখন একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আঘাতের কারণে শিক্ষকের মৃ'ত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ আছে।
নিহত স্কুল শিক্ষকের বোনের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ছেলে রিয়াজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে সোপর্দ করে সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হবে।