হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুর আলম'কে ক্লোজড করা হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তাকে চুনারুঘাট থানা থেকে প্রত্যাহার করে হবিগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি ওসি নুর আলমের সরকারি বাসা থেকে প্রায় চার লাখ টাকা চুরি হয়। অভিযোগ রয়েছে—এই টাকা বিভিন্ন সময়ে ঘুষের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিনাতদন্তে একজন সাংবাদিকের নামে চাঁদাবাজির মামলা গ্রহণ করেছিলেন। প্রভাবশালীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রকৃত তদন্ত ছাড়াই এ মামলা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তার দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্তও শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তদন্তের স্বার্থে ওসি নুর আলমকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি তার গাড়িচালক ওয়াসিমের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই ওসি নুর আলম হবিগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। অপরাধ দমন, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও মামলা নিষ্পত্তিতে অবদান রাখার জন্য তিনি এই স্বীকৃতি পান। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক অভিযোগে জড়িয়ে তিনি এখন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ওসি নুর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গ, অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সম্পূর্ণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি নুর আলমকে ক্লোজড করার ঘটনায়, এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ এটিকে প্রশাসনের স্বচ্ছতার অংশ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হলে তার ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।