ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে টিসিবি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ


আপডেট সময় : ২০২৫-০৯-১১ ২০:৪৩:০১
রাজশাহীতে টিসিবি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রাজশাহীতে টিসিবি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:

রাজশাহী মহানগরীর (৩নং) ওয়ার্ডে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকৃত দুস্থদের বঞ্চিত করে তিনতলা বাড়ির মালিক, প্রাইভেট কার ব্যবহারকারী এবং সরকারি কর্মচারীদের দিনমজুর পরিচয়ে টিসিবির কার্ড দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে। অনুসন্ধানে বেশ কয়েকজন সচ্ছল ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, যারা দিনমজুর পরিচয়ে টিসিবির কার্ড পেয়েছেন: ফজলুর রহমান: বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মচারীর ব্যাংক কলোনির অভিজাত এলাকায় তিনতলা বাড়ি রয়েছে।

দিনমুজুর হিসেবে কার্ড পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। তাজবুল হক: রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী তাজবুল হকের দাসপুকুুর মোড়ে নিজস্ব বাড়ি এবং ছেলেদের জন্যও আলাদা চারটি বাড়ি রয়েছে। তার বড় ছেলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত। রবিউল ইসলাম: শহরের নওদাপাড়া আমচত্বর এলাকায় একটি বড় হোটেল এবং দাসপুকুর মহল্লায় তিনতলা বাড়ির মালিক রবিউল ইসলাম। তিনিও দিনমজুর পরিচয়ে কার্ড পেয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি প্রাইভেটকার ব্যবহার করেন।

রবিউল অবশ্য গাড়ি ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তার একটি একতলা বাড়ি আছে। কাজী নাজমুল কবির: রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমিতে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত নাজমুল কবির। তিনিও দিনমুজুর পরিচয়ে কার্ড পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিটি কর্পোরেশনের পুরোনো কার্ড বাতিল করে নতুন তালিকা তৈরির সময় স্বচ্ছতার অভাব ছিল। ২ হাজার ৫৩০টি কার্ডের এই নতুন তালিকায় প্রকৃত গরিব, দিনমজুর, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মাসদার আলী (৫০) এবং আজাদ আলীর (৬০) মতো অনেকেই, যারা আগে টিসিবির কার্ড পেতেন এবং বর্তমানেও চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করছেন, তাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। মাসদার আলী খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাজারে ঝাড়– দিয়ে মাসে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা উপার্জন করেন।

আর আজাদ আলী নানা অসুখে ভুগেও রংমিস্ত্রির কাজ করেন। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সালমগীর হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন স্বপন এই অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও সিটি  কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তিন দফা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তারা তালিকা বাতিল করে নতুনভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্ড প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় এলাকাবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় প্রকৃত দুস্থদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই অনিয়মের তদন্ত ও প্রতিকার দাবি করছেন স্থানীয়রা।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ