কাউখালী প্রতিনিধি।
পিরোজপুরের কাউখালীতে আমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় আমড়া চাষিরা খুশি। কাউখালীর মাটি ও আবহাওয়া আমড়া চাষের উপযোগী তাই এ বছর উপজেলায় আমড়ার ফলন গত বছরের চেয়ে ভালো হয়েছে। অত্র উপজেলায় আমড়ার আবাদ হয় ভালো। ভালো দাম ও চাহিদা থাকায় কাউখালীতে বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষ হয়ে থাকে।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আমড়া গাছ রয়েছে। রাস্তার পাশে, বাড়ির উঠানে একটি আমড়া গাছ লাগানো প্রতিটি মানুষের অভ্যাসের পরিণত হয়েছে। আবার অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষ করে। কোন কোন চাষী বাগান থেকে বছরে ৫০ হাজার টাকা থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করে। শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে পরিপক্ক আমড়া পাওয়া যায়।
গ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় আমড়া কেনা বেচার বেপারী রয়েছে। তারা ফাল্গুন চৈত্র মাসে আগাম টাকা দিয়ে বাগান কিনে ফেলেন। আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত গাছ থেকে আমড়া পেরে বাজারে নিয়ে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করা হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আমড়ার আড়ত। ওইসব আড়ত থেকে আমড়া কিনে বেপারীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ, খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালান করেন।
উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামের আমড়া বাগানের মালিক অহিদুজ্জামান জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণেও আমড়ার ভালো দাম থেকে আমড়া চাষিরা বঞ্চিত হয়। আমড়ার আড়তদারের কাছে প্রতি মন আমড়া বিক্রি করি ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।
কাউখালী বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন আমড়ার আড়ংদার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৩০ মন থেকে ৪০ মন আমড়া ক্রয় করে বিভিন্ন মোকামের চালান দিয়ে থাকি। উপজেলার পুরাতন আড়ংদার মোঃ আলো বলেন, কাউখালির আমড়া খুবই সুস্বাদু তাই এখানকার আমড়ার চাহিদা খুব বেশি। প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ৩০০ মন আমড়ার বস্তা ভরে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন শহরে।
কাউখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোমা রানী দাস বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে আমড়া চাষীদের সব রকমের পরামর্শ প্রদান করা হয়। কাউখালির মাটি ও আবহাওয়া আমড়া চাষের উপযোগী। এটি একটি অর্থকরী ফসল হওয়ায় কৃষকরা আমড়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার হালদার জানান, কাউখালীতে এবছর আমড়া আবাদ হয়েছে প্রায় ৪০ সেক্টর জমিতে, সম্ভাব্য উৎপাদন প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন। আশা করা যায় এ বছর কাউখালীতে প্রায় তিন কোটি টাকার আমড়া বিক্রি হতে পারে।