মো: আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ছাতিয়ানগড় গ্রামের ঝাপুপাড়া থেকে শাহানাজ বেগম নামে (৩৫) এক গৃহবধূর মৃত্যু লাশ উদ্ধার করেছেন, থানা পুলিশ। নিহতের স্বামী মোস্তফা কামাল (৪৫) পলাতক রয়েছে।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগড় গ্রামের ঝাঁপুপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত শাহানাজ বেগম একই এলাকার আলোকডিহি সরকারপাড়াগ্রামের মৃত হাচেন আলীর মেয়ে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের বিয়ে হয় প্রায় ২২ বছর আগে। পরিবারে রয়েছে দুই পুত্র সন্তান। প্রায় এক বছর আগে শাহানাজের বড় ছেলে রাকিবুল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়লে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ গাড়িসহ আটক করে। পরে ওই ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্য জিকরুল হকের সহায়তায় শাহানাজ থানায় গিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন। সেখান থেকে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। এরপর থেকেই স্বামী মোস্তফা কামাল তার স্ত্রীকে সন্দেহ করে। আর সেই সন্দেহের জের ধরে প্রায়ই শাহানাজকে করা হতো শারীরিকভাবে নির্যাতন।
এ নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়। সালিশের পর শাহানাজকে আবারও স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার গভীর রাতেও তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলে জানিয়েছেন শাহানাজের পরিবার।
নিহতের বড় ছেলে জানান, "আমি ইপিজেডে চাকরি করি। আজ সকাল ৬টায় ইপিজেড যাই কোম্পানিতে আন্দোলনের কারণে কোম্পানি বন্ধ হয়। পরে আমি বাড়ি চলে এসে আমার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে লাশ নামিয়ে ফেলি।”
নিহতের ভাই রশিদুল অভিযোগ করে বলেন, “আমার বোনকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ওর সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত ওর স্বামীর। কিছু আগেই সালিশের মাধ্যমে এখানে আসে। আর আজকেই লাশ হল সে। তার দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকন্ড। তাদের মতে, দীর্ঘদিনের পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও স্বামীর নির্যাতনের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজমুল হক বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা—তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে"।