ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাবা ছেলে মিলে অনলাইনে করছে জাল টাকার ব্যবসা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাবা ছেলে মিলে অনলাইনে করছে জাল টাকার ব্যবসা
শেখ ফয়সাল আহমেদ
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
প্রতিনিয়ত মানুষের কষ্টের টাকা কাগজে পরিণত হয়ে যাচ্ছে কারণ সমাজে একটি অসাধু চক্র বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে জাল টাকা যা দেখতে অবিকল আসল নোটের মত।
মানুষের এই কষ্ট লাঘবের জন্য আমরা একটি দীর্ঘ অনুসন্ধান শুরু করি শুরুতেই আমরা দেখতে পাই অনলাইনে সুজন নামে একটি ছেলে প্রকাশ্য জাল টাকা সরবরাহ করছে, এবং ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আমরা বিশ্বস্ত আমাদের টাকা সহজে চালাতে পারবেন ধরা পড়বেন না,ক্রেতা সেজে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করি আমরা জাল টাকা নিতে চাই অপরপ্রান্ত থেকে সুজন নামে ছেলেটা আমাদেরকে বলে এক লাখ জাল টাকার মূল্য ১৮০০০ টাকা এবং ডেলিভারি চার্জ বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে ঠিকানা লিখে দিতে হবে তাহলেই ডেলিভারি ম্যান জাল টাকা নিয়ে চলে আসবে এবং টাকা দিয়ে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য বুঝে নিতে পারবেন, আমরা তাকে জিজ্ঞেস করি টাকার মান কেমন প্রতি উত্তর এসে বলে এটা সহজে কেউ ধরতে পারবে না এবং সারা বাংলাদেশে আমাদের নেটওয়ার্ক আছে এই টাকা উৎপাদন হয় ঢাকা থেকে, সুজনের কথামতো আমরা তার পাঠানো বিকাশ নাম্বারে (01985755659) টাকা পাঠাই, এই নাম্বারটি তার মা রহিমা খাতুন এর নামে রেজিস্ট্রেশন করা যাহার পরিচয় পত্র নম্বর (5547397280)
ঠিকানা গ্রাম রাস্তা মধুপুর, মৌজা মহল্লা মধুপুর, ইউনিয়ন ওয়ার্ড আঠারবাড়ী, উপজেলা ঈশ্বরগঞ্জ, পোস্ট অফিস আঠারবাড়ী -2282, জেলা ময়মনসিংহ, বিভাগ ময়মনসিংহ।
এই একই নাম্বার সোশ্যাল মিডিয়াতে দেওয়া আছে ক্রেতাদের যোগাযোগ করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ অথবা ইমু ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে যা ছবিতে দৃশ্যমান।
সুজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে ২০০/১০০ টাকার জাল নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, এবং ২৪ ঘণ্টার ভিতরে সমগ্র বাংলাদেশের ডেলিভারি দেওয়া হয় সারা বাংলাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক ও লোক জনবল আছে।
ঢাকায় রিক্সা চালক মান্নান মিয়ার সাথে কথা হয় অনুসন্ধানী প্রতিবেদকের রহিম মিয়া বলেন, একদিন রাতের বেলা এক ভদ্রলোক আমার রিকশায় উঠলো ৩০ টাকা ভাড়া সে আমাকে বলল চাচা মিয়া তুমি তো খুব গরিব মানুষ তুমি ১০০ টাকা রাখো আমাকে ৪০০ টাকা ফেরত দাও আমি খুশি মনে তাকে ৪০০ টাকা ফেরত দেই এবং রাতের বেলা দোকানে যখন পরিবারের জন্য চাল সবাই কিনতে যাই তখন দোকানদার বলে এই টাকা জাল বাজান কষ্টে আমার চোখে পানি চলে আইছে আজকে কি খাওয়ামু পোলা মাইয়ারে, রহিম মিয়ার মত এরকম আরো অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত এই জাল টাকার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
সুজনের এই ব্যবসার সাথে তার বাবা ও পার্শ্ববর্তী আরো কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী জড়িত আছে।
পরবর্তীতে আমরা যখন সুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি সুজন অস্বীকার করে এবং নাম্বার পরিবর্তন করে আরও একটি বিকাশ নাম্বার দিয়ে সাথে সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন শুরু করে(01401098231 সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নাম্বারের হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলে কাস্টমারদের কে এবং নতুন বিকাশ নাম্বার (01950353022) এবং এই নাম্বার গুলো পুনরায় আমরা অনুসন্ধানের জন্য আমাদের আরেক সাংবাদিক কে কাস্টমার সেজে তার সঙ্গে যোগাযোগ করালে এই নাম্বার গুলো ধরা পড়ে।
সুজন আমাদেরকে আরো জানায় আমরা থানা পুলিশ ম্যানেজ করে এই ব্যবসা চালাই।
বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে জাল টাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রত-উত্তরের সবাই বলেন এই ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা উচিত তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে এই ব্যবসা আর কেউ করার সাহস পাবে না এবং প্রশাসন যদি কঠোর নজরদারিতে রাখে তাহলে জনগণ হয়তো মুক্তি পাবে আর কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ্য এই ধরনের ব্যবসায়ীরা প্রচারণা চালিয়ে ব্যবসা করছেন?
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) জনাব শামীম হোসেননের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করব এবং যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জাল টাকার ব্যবসা সংক্রান্ত সুজনের সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টের ছবি তুলে ধরা হলো তথ্য প্রমানের জন্য।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স