প্রবাসীর বাড়ি নির্মাণে চাঁদাবাজির অভিযোগ!
আপডেট সময় :
২০২৫-০৯-০২ ১৯:০৫:২৫
প্রবাসীর বাড়ি নির্মাণে চাঁদাবাজির অভিযোগ!
তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মধ্য জামালপুর গ্রামে এক প্রবাসীর নতুন বাড়ি নির্মাণকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য এবং গ্রাম পুলিশের সঙ্গে প্রবাসীর পরিবারের তর্কাতর্কি, কথিত এক সাংবাদিকের চাঁদা দাবি ও পরে তাকে আটক সবকিছু মিলিয়ে এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
প্রবাসীর স্ত্রী হেলানা আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য বজলুর রহমান এবং গ্রাম পুলিশ শহিদুল এসে অভিযোগ করেন তিনি নাকি সরকারি রাস্তার জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করছেন। একপর্যায়ে তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি ছাড়া কাজ না চালাতে বলেন। এমনকি বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রতি স্কয়ার ফিটে টাকা দাবি করেও চলে যান বলে অভিযোগ করেন হেলানা আক্তার।
এর কিছুক্ষণ পরই নাম সর্বস্ব এক কথিত সাংবাদিক তার বাড়িতে গিয়ে ভিডিও ধারণ করেন এবং ভিডিও প্রচার না করার শর্তে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই সাংবাদিককে আটক করা হয়। পরে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ ওঠে, এ ঘটনায় ওই সাংবাদিক পরে আন্ডারগ্রাউন্ড কিছু পত্রিকায় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেন। এর প্রতিবাদে রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে জামালপুর বাজারের প্রধান সড়কে মানববন্ধন এবং ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জামালপুর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই কথিত সাংবাদিকের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। রানা সরকার নামে একজন লিখেছেন, এ ধরনের নামসর্বস্ব আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার সাংবাদিকদের কারণে প্রকৃত গণমাধ্যমকর্মীরা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকে এখন সাংবাদিকদের সাংঘাতিক বা সাম্বাদিক বলে কটাক্ষ করে।
গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম. এ আজিজুল হক বলেন, প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে আল আমিন নামে এক ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি আটক হওয়ার পর নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।
জামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন অর রশিদ দেওয়ান বলেন, নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এক নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্থানীয়রা তাকে আটক করার পর ক্ষমা চাইলে ছেড়ে দেয়।
অভিযুক্ত আলআমিনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, তিনি তথ্য সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলেন এবং বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম বলেন, আমার কাছে অভিযোগ ছিল প্রবাসী রাস্তার জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করছেন। আমি মেম্বারসহ সেখানে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাই। বাড়ির টেক্স দিয়েছে কিনা? জানতে চাই। কবে টেক্স পরিশোধের কোন প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় প্রতি স্কয়ার ফিটে ১ টাকা করে দিতে বলি। তবে আমি কোনো গালাগাল করিনি, চাইলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে পারেন। আর সাংবাদিক পাঠিয়েছি বলে যে অভিযোগ উঠেছে, আমি ওই সাংবাদিকে চিনি না। তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স