ঢাকা , সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫ , ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে হঠাৎ ভিক্ষুকদের আনাগোনা ভিক্ষাবৃত্তি নয়, যেন পরিকল্পিত অভিযান।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-০৪ ১৮:২৩:৫৬
কালীগঞ্জে হঠাৎ ভিক্ষুকদের আনাগোনা  ভিক্ষাবৃত্তি নয়, যেন পরিকল্পিত অভিযান। কালীগঞ্জে হঠাৎ ভিক্ষুকদের আনাগোনা ভিক্ষাবৃত্তি নয়, যেন পরিকল্পিত অভিযান।

তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ভিক্ষুকদের আনাগোনা। তবে এদের বেশিরভাগই স্থানীয় নয়। বহিরাগতদের একটি দল ছদ্মবেশে এসে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি বাসাবাড়ির সামনেও অবস্থান নিচ্ছে। এতে যেমন বাড়ছে জনদুর্ভোগ, তেমনি প্রশ্ন উঠছে সামাজিক নিরাপত্তা নিয়েও।     


স্থানীয়দের ভাষ্য, এই ভিক্ষুকদের আচরণ ও চলাফেরা সাধারণ ভিক্ষুকদের মতো নয়। অনেকে শিশু কোলে নিয়ে এসে কৃত্রিম কান্না শুরু করে, কেউ কেউ আবার টাকা না পেলে ব্যবহার করে গালমন্দ। এমনকি ভয়ভীতিও দেখানো হয়। এসব ঘটনার ফলে অনেকেই মনে করছেন, এই ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে রয়েছে কোনো সংঘবদ্ধ চক্রের অপতৎপরতা।     


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জের এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, সকালে অফিসে বের হলেই একঝাঁক ভিক্ষুক সামনে এসে দাঁড়ায়। কেউ কেউ অফিসেও ঢুকে পড়ে। তারা এমনভাবে কাঁদে, যেন না দিলে মহাপাপ হয়ে যাবে। আর টাকা না দিলে শুনতে হয় অপমানজনক কথা।     


স্থানীয় একজন গণমাধ্যমকর্মী জানান, একেক এলাকায় একেক দল নিয়ম করে বসে যায়। তাদের অনেকের কাছে মোবাইল ফোনও থাকে, সকালে ট্রেনে করে আসে আবার সন্ধ্যায় দেখি তারা রিকশা করে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি সাধারণ ভিক্ষাবৃত্তির গÐি ছাড়িয়ে গেছে, এখন এটা সংঘবদ্ধ কর্মকাÐ বলেই মনে হয়।     একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানান স্থানীয় এক ব্যবসায়ীও।


তিনি বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলার আগেই কয়েকজন এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রত্যেককে ২০-৩০ টাকা করে দিতে দিতে মাস শেষে বড় অঙ্কের টাকা চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ টাকা না দিলে রেগে যায়, নানা কথা বলে। এতে ব্যবসা করাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।     


স্থানীয়রা মনে করছেন, শুধু অভিযান নয় এই চক্রের নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে শেকড় উপড়ে ফেললেই বন্ধ হতে পারে এই ভিক্ষুক ছদ্মবেশী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য। এখন প্রয়োজন প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থান এবং স্থানীয় জনসচেতনতা।     


এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি। বেশিরভাগ ভিক্ষুকই বহিরাগত এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করে না। তবে স্থানীয় যারা আছেন, তাদের বেশির ভাগই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আওতায় বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। বহিরাগতদের ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।     


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ জানান, বহিরাগত ভিক্ষুকদের বিষয়ে আমরা অবগত। জনদুর্ভোগ যেন না হয় সেজন্য নিয়মিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয়দের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সমাজসেবা দপ্তর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও আছে। ভিক্ষাবৃত্তিকে কোনোভাবেই পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে দেওয়া হবে না।





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ