রাজশাহীতে প্রতারক মোস্তাফিজের বিচার দাবি করে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন
আপডেট সময় :
২০২৫-০৭-২৭ ১১:৪৭:৫৭
রাজশাহীতে প্রতারক মোস্তাফিজের বিচার দাবি করে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন
রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীতে এক আবাসন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে তার বিচার দাবি এবং ওই ব্যবসায়ীর দায়ের করা একটি মামলা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত ও সম্পূর্ণ মিথ্যা’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের আহ্ধসঢ়;বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বোয়ালিয়া পশ্চিম বিএনপির সভাপতি শামসুল ইসলাম মিলু।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুল ইসলাম মিলু বলেন, রাজশাহীর অলকার মোড়ে ‘গ্রীন প্লাজা প্রপার্টিজ’ নামে একটি আবাসন প্রকল্প পরিচালনা করছেন মোস্তাফিজুর রহমান নামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি বহু মানুষের কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে অর্থ গ্রহণ করে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেননি। এমনকি একই ফ্ল্যাট একাধিকবার বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিকবার প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তার ছোট ভাইয়ের বন্ধু মোঃ আমিনুল ইসলাম ২০২৩ সালে গ্রীন প্লাজা প্রপার্টিজের একটি ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানকে ২৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দিয়ে বরং বারবার সময়ক্ষেপণ করেন মোস্তাফিজ। এক পর্যায়ে ফ্ল্যাট না পেয়ে আমিনুল টাকা ফেরত চাইলে তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়। পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়লে ২০২৫ সালের জুন মাসে আমিনুল ইসলাম নগরীর মালোপাড়ায় মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান।
তখন মোস্তাফিজের সঙ্গে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি, যাদের সুমন ‘তাঁতীলীগের সন্ত্রাসী’ ও ‘হত্যা মামলার আসামি’ বলে উল্লেখ করেন, তারা আমিনুলকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও গালাগাল করেন। এরপর আমিনুল ইসলাম বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির প্রেক্ষিতে পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় গত ৩০ জুন থানার ভেতরেই একটি আপসনামা সম্পাদিত হয়। সেখানে মোস্তাফিজুর রহমান লিখিতভাবে তিন মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া বা বিক্রিত ফ্ল্যাট হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেন।
মিলু বলেন, “যেহেতু আমারও একটি ফ্ল্যাট প্রয়োজন ছিল, তাই আমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে আমিনুল ইসলামের হয়ে সেই ফ্ল্যাটটি নিতে সম্মত হই। তবে চুক্তির পরপরই মোস্তাফিজুর রহমান উল্টো অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় সুমনসহ বিএনপি ও যুবদল-ছাত্রদলের ২২ জন নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। সুমনের দাবি, “এই মামলার মূল উদ্দেশ্য আমাদের রাজনৈতিকভাবে হেয় করা এবং প্রতারণার অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া।”
মিলু আরও দাবি করেন, মামলার তারিখে মামলার ৫ নম্বর আসামি মোঃ শাহরিয়ার সুজন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন এবং ২২ নম্বর আসামি মো. আরিফুল শেখ বনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এতেই প্রমাণ হয় এই মামলা সাজানো এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে শামসুল ইসলাম মিলু বলেন, “মোস্তাফিজ নিজেই রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক নজরুল হুদার সঙ্গে ফোনে আলাপকালে স্বীকার করেছেন যে, মামলাটি তিনি প্রশাসনের প্রেসক্রিপশন’ অনুযায়ী দায়ের করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এই ফোনালাপের রেকর্ড আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এমন বক্তব্যের ভিত্তিতে মিলুর প্রশ্ন, একজন প্রতারক কীভাবে প্রশাসনের আশ্রয় নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা করতে পারে? এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, এটি একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ষড়যন্ত্র। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচার চাই। প্রতারক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে তারা মানহানির মামলা করবেন এবং আদালতের আশ্রয় নেবেন। এছাড়া প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট অংশ যদি এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকে, তাহলে সেটিও তদন্ত করে প্রকাশ্যে আনার দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স