নিজস্ব প্রতিবেদক : আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন ছাড়া গণমানুষের কল্যাণ ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে  মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। 


তিনি আজ সকালে রাজধানীর উত্তরার সেক্টর কল্যাণ সমিতির হলে উত্তরা পশ্চিম থানা জামায়াতের ১১ নং সেক্টর ওয়ার্ড আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ইব্রাহীম খলিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১৮ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য বীর মুক্তিযুদ্ধা ইঞ্জিয়ার মোসলেম উদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের উত্তরা পশ্চিম থানার এইচআরডি সম্পাদক ও জুলাই বিপ্লবের জীবন্ত শহীদ ছাত্রনেতা সাইফ আরেফিন রাহাত, ১১ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী বিশিষ্ট সমাজসেবক প্রিন্সিপাল সালাহউদ্দিন ভূঁইয়া ও ১১ নং সেক্টর বাইতুন নূর মসজিদের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক হাজী আরব আলী।


উপস্থিত ছিলেন, উত্তরা পশ্চিম থানার নায়েবে আমীর মকবুল হোসেন খান, থানা সেক্রেটারী ফিরোজ আলম, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মশিউর রহমান, জি এম আসলাম, মাহমুদুর রহমান, শাইখুল সাকিব ও সহিদুল ইসলাম প্রমূখ।


সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। ত্যাগ ছাড়া কোন কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন ও গণমানুষের কল্যাণ করতে হলে সকল কাজে আমাদেরকে সিরিয়াস হতে হবে। যে জিনিসের প্রতি সিরিয়াসনেস বা ভালোবাসা থাকে না, তা কখনোই অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই আগামী দিনে ইসলামী আন্দোলনকে গতিশীল ও বেগবান করতে হলে প্রত্যেক  মানুষের ঘরে ঘরে দ্বীনে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। এ বিষয়ে কোনভাবেই অবহেলা বা শৈথিল্যের সুযোগ নেই। আমাদের উদাসীনতার কারণে কেউ যাতে দাওয়াতের বাইরে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 


মূলত, দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের প্রত্যেককে দাঈ ইলাল্লাহর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। তিনি দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ময়দানে সকলকে সর্বশক্তি নিয়োগের আহবান জানান।


তিনি বলেন, মানবরচিত আইন দিয়ে কখনোই মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়। বিগত ৫৪  বছর মানুষের তৈরি আইন দিয়ে দেশ শাসিত হওয়ার কল্যাণ মানুষের মুক্তি মেলেনি। 


মূলত, আল্লাহর আইন ও বিধানই নির্ভূল। তাই আর্ত-মানবতার মুক্তির জন্য সকলকে ইসলামের দিকেই ফিরে আসতে হবে। আর জামায়াতে ইসলামী দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াত নেতৃত্ব অধিকতর সৎ ও যোগ্য। তাই তাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে দেশে কোন দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, মানুষের অধিকার হরণ, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম ও অপহরণ সহ কোন প্রকার অপরাধ থাকবে না বরং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশের সকল নাগরিক তাদের নিজ নিজ সাংবিধানিক অধিকার যথাযথভাবে ভোগ করবেন। রাষ্ট্রই তাদের সকল অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। মানুষে মানুষে কোন বিভেদ বা বৈষম্য থাকবে না। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে আপোষহীন ভূমিকা পালনের আহবান জানান। 


মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, জামায়াত নেতৃত্ব শুধু যোগ্য নন বরং সৎও। আমরা বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হবো। সরকারে জামায়াতের প্রতিনিধিরা কোনভাবেই দুর্নীতি বা অপরাধের সাথে জড়িত হবেন না। দেশে একটি সুষম ও ইনসাফপূর্ণ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে প্রমাণ করেছি আমাদের দ্বারাই দেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত করা সম্ভব। তাই আমাদের পক্ষে এখন ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই বরং আগামী নির্বাচনে বিজয় লাভের জন্য এখনই নির্বাচন যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। তিনি স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।