ঢাকা , বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ , ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ড.আনিসুজ্জামান চৌধুরী


আপডেট সময় : ২০২৫-০৬-২৪ ২০:৪২:৪৯
জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ড.আনিসুজ্জামান চৌধুরী জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ড.আনিসুজ্জামান চৌধুরী
 
 
মকবুল হোসেন, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের জাতিসংঘের ক্যাটাগরিভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণ হবে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে, জীবনযাত্রার মান আরো ভালো হবে। তবে এ উত্তরণের সাথে সাথে কিছু চ্যালেঞ্জেরও মুখোমুখি হতে হবে আমাদের। দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে, সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যে দল-মত-গোষ্ঠীতে বিশ্বাস করি না কেন, জাতীয় সংকটে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংকট উত্তরণে সচেষ্ট হতে হবে। 

 
আজ, ২৪জুন'মংগল বাডলোকাল লেভেল স্টেইকহোল্ডারস কনসালটেশন অন ইনক্লুসিভ, স্মুথ এন্ড সাসটেইনেবল এলডিসি গ্রাজুয়েশন' (অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও মসৃণ এলডিসি গ্রাজুয়েশনে স্থানীয় অংশীজনদের সাথে পরামর্শ) শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের শহীদ শাহাবুদ্দীন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায়  সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।


অর্থ মন্ত্রণালয়ের 'সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন প্রজেক্ট' (এসএসজিপি) কর্তৃক আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ। এছাড়াও ময়মনসিংহের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ, এনজিও প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট  ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

 
এই কনসালটেশনে এলডিসি গ্রাজুয়েশন হলে আমরা কি কি সুবিধা পাবো, কি কি চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় অংশীজনদের কি করণীয় হতে পারে তা নিয়েই আলোচনা হয়। শুরুতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অব: অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ রেজাউল বাশার সিদ্দিকী এবং ড. মোস্তফা আবিদ খান এলডিসি উত্তরণ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ক তথ্যবহুল দুটি প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করেন।


এরপর মূক্ত আলোচনায় উপস্থিত অংশীজনেরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গার্মেন্টস পণ্য ও প্রবাসীদের উপর নির্ভরশীলতা কমানো, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা যেমন চিংড়ি ও পাটজাত পণ্যের প্রসার, চা রপ্তানির উদ্যোগ, কৃষিজাত পণ্যের টেকসই উৎপাদন ও সংরক্ষণ, টেকসই গ্রাজুয়েশনে কৃষি গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি,  নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ, ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর ব্যবসায়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সৃষ্টি, মেধাস্বত্ব ও প্যাটেন্ট এবং পরিসংখ্যানের তথ্যের সঠিকটা নিয়ে আলোচনা করেন।


এরপর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে আনন্দের। তবে এর সাথে যে চ্যালেঞ্জ আসবে, তা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশ অতীতেও এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, সকলের সহযোগিতায় এ যাত্রায়ও উতরে যাবে। সরকার চ্যালেঞ্জ প্রশমিতকরণ এবং এলডিসি উত্তরণকে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মসৃণ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

 
প্রধান অতিথি বলেন, এলডিসি অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিজের ইচ্ছাধীন হলেও উত্তরণটা হতে হয় সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায়। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ হিসেবে এলডিসি উত্তরণের তিনটি সূচকের সবগুলোতেই উতরে গেছে। এটা একটা সাফল্য। এ সাফল্য ধরে রাখতে হলে জাতীয় দৃঢ়তার কোনো বিকল্প নেই।


থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের অর্থনৈতিক অবস্থা একসময় ভালো ছিল না উল্লেখ করে বলেন, তারা জাতীয় দৃঢ়তা ও ঐক্যের মাধ্যমে আজ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যেতে পারলে বাংলাদেশও পারবে। এর জন্য দরকার দেশপ্রেম। আগে লক্ষ্য ঠিক করে তারপর সকলে একত্রে সে লক্ষ্যে অগ্রসর হলেই এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব।


সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি হিসেবে জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি উত্তরণ হতে চলেছে এটা আশার সংবাদ। তবে কিছু সুবিধা যেমন শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা, ওষুধে প্যাটেন্ট, ঋণের সুদহার ইত্যাদি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এতে সাময়িকভাবে অসুবিধা হলেও বৃহৎ পরিসরে দেশের জনগণ উপকৃত হবে, জীবনমানের উন্নয়ন হবে। সচেতনতার পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।




 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ