নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক খুনসহ ডাকাতি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ০১ জন আসামি রায় ঘোষণার ৫ দিনের মধ্যে গ্রেফতার। 


বাংলাদেশ আমার অহংকার- এই স্লোগান নিয়ে র‍্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা এবং বিভিন্ন আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।


গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র‍্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১ গত ০৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখ হতে অদ্যবধি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন অভিযানে চাঞ্চল্যকর অপরাধী ১০৫ জন, আরসা সদস্য-১৫ জন, হত্যা মামলায় ১৩০ জন গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলায় ৫৪ জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ১৮ জন গ্রেফতারসহ ৮৮ টি অস্ত্র, ১২৮৬ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ৩০০ জন এর অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে র‌্যাব-১১। পাশাপাশি ৪৬ জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ৫০ জন ভিকটিম উদ্ধার এবং ছিনতাইকারী ও ডাকাত ৫৯ জন, জেল পলাতক ৩৬ জন, প্রতারণার আসামী-১২ জন সহ অন্যান্য অপরাধী প্রায় ৩০৩ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র‌্যাব-১১ জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। 


স্থানীয় ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায় যে, বিগত ইং ২৫/০১/২০২০ তারিখ রাত্র অনুমান ০৯.৪৫ ঘটিকার সময় এজাহারকারীর ছোট ভাই সাগর আরএফএল কোম্পানীর কাভার্ড ভ্যান চট্টগ্রাম ডিপো হতে নরসিংদী ঘোড়াশাল যাওয়ার পথে সোনারগাঁও থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আষাঢ়িয়ারচর ব্রীজের পূর্ব পার্শ্বে ঢাকাগামী লেনের রাস্তার পাশে পৌঁছে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য ড্রাইভার মোঃ হোসেন আলী কাভার্ড ভ্যানটি থামালে ড্রাইভার এবং এজাহারকারীর ভাই হেলপার মোঃ সাগর কাভার্ডভ্যান হতে প্রসাব করার জন্য নীচে নামেন। তারা প্রসাব করার পরপরই অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন্য ডাকাত চাকু, ছুরিসহ এসে তাদের চাকু ও ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের নিকট যা কিছু আছে তা দিয়ে দিতে বলে। তারা দিতে রাজি না হওয়ায় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন ডাকাত এজাহারকারীর ভাই সাগরের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে এবং একপর্যায়ে ডাকাতরা ধারালো চাকু ও ছুরি দিয়ে সাগরকে এলাপাথারীভাবে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। একপর্যায়ে আসামীরা সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে দ্রত পালিয়ে যায়।


উক্ত ঘটনার, পরপরই হাইওয়ের টহলরত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার মোঃ হোসেন আলী পুলিশের সহায়তায় এজাহারকারীর ভাই সাগরকে দ্রুত সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সাগরকে মৃত ঘোষনা করেন।


পরে নিহতের বড় ভাই মোঃ আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি খুনসহ ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আদালত বিচারকার্য শেষে গত ২৮ মে, ২০২৫ ইং তারিখ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ডাকাতির সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ড প্রদান করেছেন। একই সাথে তাদের সবাইকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময়ে তারা আদালতে অনুপস্থিত ছিল। 


রায় ঘোষনার পর হতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে যাবাজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ রাসেল (৩০), পিতা-মজিবর তালুকদার, মাতা-জরিনা বেগম, সাং-তাতরাকান্দা, থানা-গৌরীপুর, জেলা-ময়মনসিংহ. এ/পি-কাঁচপুর, সোনাপুর, থানা- সোনারগাঁও, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এর অবস্থান সনাক্ত পূর্বক র‍্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর, নারায়নগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ২ জুন ২০২৫ ইং তারিখ সন্ধ্যা ১৮:৪০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন কাঁচপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। 


গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।