কটিয়াদী মাঠ ভরা সবুজ ধানের শীষে কৃষকের স্বপ্ন
আপডেট সময় :
২০২৫-০৪-১৬ ১৪:০৭:১২
কটিয়াদী মাঠ ভরা সবুজ ধানের শীষে কৃষকের স্বপ্ন
এম এ কুদ্দুছ, প্রতিনিধি, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তার রচিত ৩৯ ধানক্ষেত্ ৩৯ কবিতায় ধানক্ষেতের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছেন- পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত, সবুজে হলুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত।
ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে, ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ঘন সবুজের সমারোহ। বাতাসে বোরো ধানের সবুজ ঢেউ উপজেলার সকল কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ। কয়েকদিনের মধ্যেই শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হবে।
আর এমন সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলে উঠছে প্রকুতি। ইরি-বোরো ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।ধানের কাঁচা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের মন। যেন হারিয়ে যায় সবুজ মাঠে। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করে তুলেছে।
অনুক‚ ল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। ফলে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিসসুত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১২ হাজার ৩১০হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৪৬১০ হেক্টর, উফশী জাতের ৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৫০ হেক্টর জমি। কদিন পরেই ধানের সবুজ চারা এবং কাঁচা শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে।
এরপর, সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। মাঠ ভরা ফসলের স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠবে আনন্দের ছোঁয়া। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা। বোরো মৌসুমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখে এ অঞ্চলের চাষিরা। এবছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। সার, বীজ ও বালাইনাশক সংকট ছিল না। ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হয়েছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, কটিয়াদী চান্দপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের ইরি-বোর ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি ক্ষেতে শীষ উকি দিচ্ছে। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত ইরি- বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি ধান কাটা শুরু হবে। তখন পূরণ হবে কৃষকের স্বপ্ন। উপজেলার বনগ্রাম গ্রামের কৃষক মুজিবুর, মিলন, রোকন উদ্দিন, মোসলেম উদ্দিন,
আবুল কাশেমসহ অনেকেই বলেন, চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি আমরা। কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব।’
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ইরি- বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। তাই ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স