পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কালী গঙ্গা নদীর সয়নার মোহনায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ব-দ্বীপ খ্যাত সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে কয়েকটি গ্রাম।
জানা গেছে, উপজেলার সয়না রঘনাথপুর ইউনিয়নে সয়না গ্রামের পশ্চিম পাশ থেকে বয়ে যাওয়া কালী গঙ্গা নদী। এ নদীর পিরোজপুরের হুলারহাট অংশে রয়েছে একটি বালু মহল। এই মহলটি সরকার ইজারা দিয়ে নিয়মিত রাজস্ব আদায় করছে। অপর দিকে কাউখালীর অংশে কোন বালু মহল না থাকলেও বালু মহল ইজারা মালিকানা কর্তৃপক্ষ নিয়মিত অবৈধ ভাবে বালু মহলের বাইরে গিয়ে কাউখালী উপজেলার মধ্যে দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় প্রবেশ করে দিনে ও রাতে উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের কালিগঙ্গা নদীর তীরবর্তী মেঘ পাল, সয়না ও রঘুনাথপুর এই তিনটি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিগঙ্গা নদীতে এসে কালিগঙ্গার বালু উত্তোলন করে নিয়ে বিক্রি করে মাটি ও বালু খেকো নামে পরিচিত অসাধু বালব্যবসায়ীরা।
ফলে কাউখালীর দ্বীপ ইউনিয়ন নামে খ্যাত সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। বর্তমানে নদীর তীরে অতিরিক্ত স্রোত বয়ে যাওয়ায় নিয়মিত নদীর পাড় ভেঙ্গে কাউখালির মানচিত্র থেকে ওই গ্রামগুলো বিলিন হয়ে যাওয়ার হুমকিতে পড়েছে। এসব গ্রাম গুলো হলো সয়না, রগুনাথপুর, মেঘপাল, ধাবড়ী সহ আশেপাশের এলাকা। এই সকল গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারানোর আকাঙ্খায় দিন রাত দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম সময় পার করছে।
প্রতিনিয়িত বালু উত্তোলনের ফলে এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানান, ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুস্তম আলী।
তিনি আরও জানান, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধাবড়ীর মাহবুব হোসেন, সত্তার শেখ, হানিফ শেখ, সুকুরঞ্জন হালদার, মন্নান হাওলাদার, সহ অসংখ্য মানুষ। অনেকেই জমি ও বাড়ী হারিয়ে ভুমিহীন হওয়ায় ঠাই হয়েছে, ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের নির্মিত আশ্রয় কেন্দ্রে। নদী ভাঙ্গান রোধ ও বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য সংশিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আবু সাঈদ কয়েক মাস পূর্বে জেলা প্রসাশক বরাবরে লিখিত আবেদনও করে ছিলেন বলেন তিনি দাবি করেন।
ফলে কালী গঙ্গা নদীর সয়না মোহনায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের বন্ধ করতে গত ৮ ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাউখালী উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেন, এবং হাতেনাতে মা-বাবার দোয়া এন্টারপ্রাইজ, তুষার এন্টারপ্রাইজ ও বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের তিনটি বালু কাটা ড্রেজার জাহাজ ও ১টি বলগেট পরিচালনার জাহাজ জব্দ করে কাউখালী উপজেলা প্রশাসন।
এই জাহাজগুলোতে বালুকাটা অথবা পরিবহন করার কোন বৈধ কাগজপত্র ছিল না বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র থেকে জানা যায়। একশ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তি এই জাহাজগুলো ভাড়া নিয়ে ভালো উত্তরণের কাজ করে।