বাকেরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দোসর ইউপি সদস্য কামাল ফের বেপরোয়া
আপডেট সময় :
২০২৫-০৩-২০ ২৩:০৯:০০
বাকেরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দোসর ইউপি সদস্য কামাল ফের বেপরোয়া
স্টাফ রিপোর্টার।
ছাত্র-জনতার রক্তেভেজা অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট বিজয় অর্জিত হওয়ার মধ্য দিয়ে পটপরিবর্তনের পরও আঁতাতের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা বা দোসররা। আওয়ামী ফ্যাসীবাদের অবসান হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো রয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কোন কোন স্থানে অপরাধীদের শাস্তির আওতায়ও আনা হয়েছে। কিন্তু বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুবিধাভোগী নানান অপকর্ম করেও এখনো রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে আওয়ামী লীগ শাসনামলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে তিনি নির্বাচন অংশগ্রহণ করে ভোট ডাকাতি করতেন। এমনকি নিজেও ভোট ডাকাতি করে বারবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাকেরগঞ্জ উপজেলায় জোটের স্বার্থে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি রতনা আমিন। যে কারণে তৎকালীন সময়ে এমপির সাথে কামালের সম্পর্ক ছিল গভীর। ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক থেকে নিজ গ্রামে আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন রকমের দুর্নীতি অপকর্ম করেছেন কামাল।
অভিযোগ উঠেছে স্বৈরাচারের শাসনামলের মতো এখনো তিনি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন নিজ এলাকায়। আধিপত্য ধরে রাখতে বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন কামাল। তাঁরই অংশ হিসেবে সম্প্রীতি সময়ে ইউপি সদস্য কামাল নিজের আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পথ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ গ্রহণ করেন। খোলস পাল্টে টাকার বিনিময়ে স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় নতুনভাবে আধিপত্য বিস্তার করছেন। জাতীয় পার্টির খোলস পাল্টিয়ে বিএনপি বনে যাওয়া চেষ্টা করছেন কামাল মেম্বর।
স্বৈরাচার ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ সরকার থাকাকালীন সময়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত এমপি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রতনা আমিন ও রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা মার্কার নির্বাচিত চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদারের ছত্রছায়া থেকে দীর্ঘ বছর ধরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে এই ইউপি সদস্য কামাল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে কামালের কিছুই ছিল না। ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নানানরকম অনিয়ম-দুর্নীতি করে রাতারাতি কামাল বিপুল পরিমাণ অর্ধেক মালিক হয়েছে। বোয়ালিয়া বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পাশেই গড়ে তুলেছেন তিন তলা ভবন। নিজ নামে অনেক সম্পদ ক্রয় করেছেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে বারবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ নিয়ে ৮ নং ওয়ার্ডে উন্নয়ন প্রকল্পের কোন কাজ না করে ইউপি তহবিল থেকে উক্ত টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে কামাল মেম্বর। আর যাহার সহযোগিতায় ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান বশির সিকদার ও পরিষদের সচিব।
বিগত দিনগুলোতে ইউপি সদস্য কামাল পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদারের সাথে ভাগাভাগি করে ভিজিডি ও জেলেদের বিজিএফ এর চাউল উত্তোলন করে কিছু চাউল জেলে এবং সাধারন মানুষের মধ্যে বিতরন করে অবশিষ্ট বেশিরভাগ চাল কালোবাজারে বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধেও সক্রিয় অবস্থান ছিল কামাল ও তার বাহিনী। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পরে মামলার আসামি হয়েছেন ইউপি সদস্য কামাল। সম্প্রীতি সময়ে ইউপি সদস্য কামাল ফের বেপরোয়া হয়ে উঠলে স্থানীয়রা কামালকে ইউপি সদস্যের পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ভিক্ষোব মিছিল করেছেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স