নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আলেম ও তালেব উভয়ই সুসংবাদ প্রাপ্ত। কারণ, হাদিসে রাসূল (সা.)-এ বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যিনি নিজে কুরআন শিক্ষা করেন এবং অপরকে শিক্ষা দেন’। আমরা আজ তাদের সাথে মিলিত হতে পেরে গর্ববোধ করছি। তিনি দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে দেশের আলেম সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?height=314&href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2FBanglarAloNewsBD%2Fvideos%2F3937983643145400%2F&show_text=false&width=560&t=0" width="560" height="314" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowfullscreen="true" allow="autoplay; clipboard-write; encrypted-media; picture-in-picture; web-share" allowFullScreen="true"></iframe>
তিনি আজ রাজধানীর মিরপুর-১৪ এর গ্রান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে ঢাকা-১৫ আসনের উলামায়ে কেরাম ও ইয়াতিমদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ইফতার মাফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা,ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমূখ।
https://youtu.be/JI9H5FszHk4
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দ্বীনই আমাদের জীবনোদ্দেশ্য। দেশে দ্বীনের শিক্ষা যত সম্প্রসারিত হবে, ততই সমাজ আলোকিত হয়ে উঠবে। আর দ্বীনের শিক্ষা সংকোচিত হলে নেমে আসবে অন্ধকার। যার প্রমাণই হচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন-দুঃশাসন। সে সময় দেশ বরেণ্য আলেম-উলামাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ আর পায়ে ছিল ডাণ্ডাবেরী। অথচ চোর, ডাকাত, অপরাধী ও সমাজ বিরোধীরা গোটা দেশ নির্বিঘ্নে দাপিয়ে বেড়িয়েছে।
তিনি তার নিজের গ্রেফতারের দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো গভীর রাতে। কিন্তু আমাকে আয়না ঘরে রাখা না হলেও আমি তা দেখেছি। আমরা এমনভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিলো যেন তারা কোন ভয়ংকর অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম কয়েক দিন কেরানীগঞ্জ কারাগারে রাখার পর আমি সহ ৩৮ জন বরেণ্য আলেমকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বদলী করা হয়। গাড়ীতে আমি ছাড়া প্রত্যেকের হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে বেড়ি পড়া দেখে আমি কেঁদেছি। কিন্তু মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দিয়েছেন’। তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে দেশের আলেম সমাজকে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমযান মাগফেরাত ও গুনাহ মাফের মাস। মূলত, সিয়াম মানুষের গোনাহ পুঁড়ে ছাই করে দেয়। হাদিসে রাসূল (সা.)-এ এসেছে, একদিন রাসূল (সা.) পরপর তিন বার আমীন বললেন। সাহাবীগণ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনি তো এমন কখনো করেন না। প্রত্যুত্তেরে রাসূল (সা.) বললেন, আমার কাছে জিব্রিল আমীন এসে বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে তার জীবনে রমযান মাস পেলো অথচ নিজের গোনাহ মাফ করে নিতে পারলো না। আমি বললাম, আমিন!
এরপর তিনি বলছেন, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোন একজন বার্ধক্য অবস্থায় পেলো অথচ জান্নাত লাভ করতে পারলো না ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক। আমি বললাম আমিন। জিব্রিল আমিন আবার বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে, আপনার নাম শোনার পর দরূদ পড়লো না। আমি বললাম, আমিন। তাই আমাদের প্রত্যেককে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য রমযান মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালন করতে হবে।
আমীর জামায়াত বলেন, এদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। তারা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। মানুষ হিসাবে সকলের কল্যাণে কাজ করা আমাদের কর্তব্য। ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি। তারা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। বিপ্লবোত্তর অনেক কিছু হবে বলে কল্পকাহিনী প্রচার করা হলেও তার ১ ভাগও হয়নি। যতটুকু হয়েছে সর্ব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা তাও সমর্থন করি না। মূলত, এদেশে কোন বৈষম্যের স্থান দেওয়া হবে না। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।