আশিকুর রহমান শান্ত
ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তালতলীর পূর্ব পাশের লোনদা মিঝি বাড়িতে জায়গা জমির জের ধরে ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মোঃ সোহাগ এর নেতৃত্বে ২০/৩০ জন সংঘবদ্ধভাবে মোঃ জসিম (৫০) গংদের উপর হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলার ঘটনায় নারী সহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়। আহতরা ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ড ও নারী সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা ৬ টায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মোঃ জসিম অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পূর্বে আমরা এখানে ১১ শতাংশ জমি ক্রয় করিয়া মালিক থাকি। কিন্তু ক্ষমতা ও টাকার দাপট দেখিয়ে দীর্ঘদিন আমাদের জমিটি আমাদেরকে বুঝিয়ে না দিয়ে নানান ধরনের তালবাহানা করে যাচ্ছে মালিক পক্ষ। তারপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য মোঃ সোহাগ এর নেতৃত্বে আমাদেরকে এলাকা ছাড়া করার উদ্দেশ্যে কিছু দিন পরপরই হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালাতো।
দীর্ঘ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হলে গত কয়েকদিন আগে আমাদেরকে আমাদের ক্রয়কৃত ১১ শতাংশ জমি সোহাগ মেম্বার নিজে উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দেয়। তো বুঝিয়ে দাও জমিতে আমরা আমাদের ঢাকার ঘর নির্মাণ ও টিনসেট বাউন্ডারি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনের মালামাল নিয়ে সেখানে যাই। কাজ চলমান অবস্থায় মোঃ শামিম ওরফে বাবু মিঝি, ইকবাল, হৃদয় ও নোমান আমাদেরকে বাধা প্রদান করে। এর কিছুক্ষণ পর সোহাগ মেম্বার এসে আমাদেরকে বলে তোমরা এখান থেকে আরো দুই তিন হাত পিছে তোমাদের বাউন্ডারি তৈরি কর। আমরা সেটি মেনে সেইভাবে কাজ করতে ছিলাম। সোহাগ মেম্বার আমাদের কে কাজ করতে বলে অন্য দিকে তার ছেলে, ভাই, ভাতিজা সহ প্রায় ২০/৩০ জন এর একটি গ্রুপ নিয়ে এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে সোনার ৩ জোড়া কানের দুল ও একটি গলার চেইন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
আহত বিবি হালিম (৪৫) বলেন, আমরা আমাদের জমিতে কাজ করতে ছিলাম। হঠাৎ করে সন্ধ্যায় সোহাগ মেম্বার এর নেতৃত্বে আমার ছেলেদের উপর হামলা করে তাদেরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এলাকার লোকজনের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তারা আবারও আমাদের উপর হামলা করে আমাকে পিটিয়ে আমার গায়ের সকল জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে। আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গা গুলোতে হাত দিয়ে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে।
আহত আয়েশা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে মারধর করার খবর শুনে আমরা সেখানে ছুটে যাই। সেখান থেকে আমার স্বামী ও দেবর কেউ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সোহাগ মেম্বার ও বাবু মিজি নিজের নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা করে। আমার কোলে থাকা ছোট শিশুটিকে কোল থেকে সিটকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় সোহাগ মেম্বার গ্রুপ হলো সবচেয়ে বড় ভূমিদস্য। এদের অত্যাচারে অত্র এলাকায় কেউ ভালোভাবে বসবাস করতে পারছে না। এরা আজকে আমার জমিতে জোর করে ঘর উঠাবে কালকে আরেকজনের জমিতে জোর করে ঘর উঠাবে এভাবে প্রায় ১০০ জায়গায় জোরপূর্বক জমি দখল করে আছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া দরকার।
অভিযুক্ত সোহাগ মেম্বার এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইলটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।