ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্চিত


আপডেট সময় : ২০২৫-০২-০৯ ১৯:২১:১০
নোয়াখালীতে পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্চিত নোয়াখালীতে পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্চিত

 

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কবিরহাটে প্রতিবন্ধী যুববকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশের হাতে হেনস্তা ও লাঞ্চিতের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক।

শনিবার (৮ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে কবিরহাট থানার ভিতরে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন মিয়া কর্তৃক সাংবাদিক হেনস্তা ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ কর্তৃক হেনস্তা ও লাঞ্চিত সাংবাদিকের নাম জহিরুল হক জহির। তিনি জাতীয় দৈনিক তৃতীয় মাত্রার নোয়াখালী জেলা বিশেষ প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নোয়াখালী মিডিয়ার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাংবাদিক জহিরুল হক জহির অভিযোগ করে বলেন, নোয়াখালীর কবিরহাটে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে বেচু নামের এক প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহের সময় কবিরহাট থানার ওসি শাহিন আমাকে হেনস্তা, লাঞ্চিত ও অপমান-অপদস্ত করে।

সাংবাদিক জহির বলেন, প্রতিবন্ধী যুববকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কয়েকজন আটক হয়েছে শুনে, আপডেট নিউজ এর জন্য বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমি থানায় গিয়ে মামলার তথ্য বিবরনী চাইলে ওসি শাহিন বলেন, এখনও মামলা হয়নি, মামলার কাজ চলমান। রাত ৮টার সময় আবারও থানায় গিয়ে মামলার তথ্য  চাইলে ওসি শাহিন আবারও বলে-এখনও মামলা হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার সময় আবারও থানায় গিয়ে মামলার তথ্য চাইলে তিনি আবারও বলে-এখনও মামলা হয়নি। এই মামলায় কতজন আটক হয়েছে সে তথ্যও দেয়নি ওসি ।

তখন আপডেট নিউজ এর ডকুমেন্টস হিসেবে নিহতের মা নাজিয়া খাতুন এর (ভিডিও) বক্তব্য নেয়ার সময় ওসি শাহিন আমার স্মার্টফোন কেড়ে নিয়ে বলে- তুই কার অনুমতি নিয়ে ভিডিও করতেছো? তুই আমারে চিনোস? ভিডিও করার আগে আমার সম্পর্কে খোজ-খবর নিছত ব্যাটা? টাউট-বাটপার ! আরো বিভিন্ন গালি দিতে দিতে সে তার কক্ষের ভিতরে নিয়ে অন্য সব পুলিশ সদস্যদের ডেকে বলে- এই টাউট এর মোবাইল এই মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করো এবং তাকে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে থানার লকআপে আটকে রাখো। এই মামলায় তাকে আসামি করে সকালে চালান করে দাও। এক পর্যায়ে হঠাৎ ওসি ও থানার পুলিশ সদস্যরা আক্রমণাত্মক হয়ে মারতে তেড়ে আসে।

সাংবাদিক জহির আরো বলেন, আমার স্মার্টফোন জব্দ করে, ওসি তার রুমের ভিতরে ২-৩ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখে এবং জোর করে কেনো ভিডিও তথ্য সংগ্রহ করেছি, সে বিষয়ে তারা আমার ভিডিও ধারণ করে এবং ভিডিওতে তাদের কথা মত, কথা বলতে বাধ্য করে।

এক পর্যায়ে রাত ১১টার সময় ওসি শাহিন- উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মিদের ডেকে এনে আবারও হেনস্তা করে এবং নিউজ এর ডকুমেন্টস ভিডিও গুলো ডিলেট করে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ওসি শাহিন উপজেলার প্রত্যেকটি ইটভাটা থেকে প্রতিমাসে ২০হাজার টাকা করে নেয়। তাকে টাকা দিতে দেরী হলে পুলিশ পাঠিয়ে ইটভাটার মালিককে থানায় আসতে বলে। এছাড়াও বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে প্রতিমাসে টাকা নেয়। কেউ টাকা না দিলে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, এই থানায় এখনও গ্রেফতার বাণিজ্য চলছে। তাছাড়া প্রতিটি মানুষকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ নিতে ২-৩ তিন হাজার টাকা পুলিশকে দিতে হয়। টাকা না পুলিশ কাজ করেনা।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ কর্তৃক সাংবাদিককে হেনস্তা, লাঞ্চিত, অপমান ও অপদস্ত ঘটনায় নোয়াখালীর সাংবাদিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা  বিরাজ করছে।

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে, নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুল্লাহ আল ফারুককে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 


নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ