ঢাকা , সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী রেল-স্টেশনের ফুটপাত পরিণত হয়েছে পাবলিক টয়লেটে! দুর্ভোগে পথচারীরা

মাসুদ রানা রাব্বানী
আপডেট সময় : ২০২৫-০২-০২ ১৯:৪০:৩৫
রাজশাহী রেল-স্টেশনের ফুটপাত পরিণত হয়েছে পাবলিক টয়লেটে! দুর্ভোগে পথচারীরা রাজশাহী রেল-স্টেশনের ফুটপাত পরিণত হয়েছে পাবলিক টয়লেটে! দুর্ভোগে পথচারীরা
 

 

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী রেল স্টেশনের প্রবেশ পথের ফুটপাত বর্তমানে পরিণত হয়েছে অঘোষিত পাবলিক টয়লেটে। ফলে পথচারীদের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার গুরুত্বপূর্ণ পথ হওয়া সত্বেও অযতœ-অবহেলার কারণে এটি এখন নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।

স্টেশনের প্রবেশ পথের অধিকাংশ অংশ বিভিন্ন ব্যবসায়ীর দখলে চলে গেছে, ফলে পথচারীদের হাঁটার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। বিশেষ করে জিআরপি থানার গেট পর্যন্ত এলাকা একেবারে নোংড়া হয়ে পড়েছে। রিকশাচালক, অটোচালক এবং বাস-টার্মিনালের শ্রমিকরা যেখানে- সেখানে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে রাস্তা ভাসিয়ে দেওয়ার কারণে পথচারীদের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এই সমস্যার বিষয়ে পথচারী সুমনা পারভিন বলেন, আমরা ট্রেন থেকে নেমে বাসায় যাওয়ার পথে ফুটপাতে হাঁটতে পারি না। বাধ্য হয়ে রাস্তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়, যা খুবিই বিপজ্জনক। গাড়ির চাপের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে গিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে স্টেশনের পাশের দোকানি মাহাতাব হোসেন বলেন, দিন-রাত এখানে মানুষ প্রস্রাব করে। দুর্গন্ধের কারণে দোকানে বসে থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। অথচ প্রশাসনের কোনো নজর নেই।

একাধীক ট্রেনযাত্রী অভিযোগ করে বলেন, স্টেশনের পাবলিক টয়লেটের অপর্যাপ্ততা এবং অপরিষ্কার অবস্থার কারণেই অনেকে ফুটপাতকেই বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছেন সাধারণ জনতা। স্টেশনের ও বাস টার্মিনানের আশপাশে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকায় অনেকেই ফুটপাতের যেখানে-সেখানে প্রস্রাব করছেন। তবে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এ ব্যপারে রাজশাহী রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার (এসএমআর) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা এ সমস্যা সম্পর্কে জানি। বারবার নিষেধ করার পরও কিছু অসচেতন মানুষ এ ধরনের কাজ করছে। রেলওয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্টেশনের বাইরের ফুটফাত সম্পূর্ণ সিটি করপোরেশনের আওতায়। তারা এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে। তাদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

অন্যদিকে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মামুন ডলার বলেন, এটা সত্যিই দুঃখজনক। শহরের ব্যস্ততম এলাকায় এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটের পদ শূন্য রয়েছে, তবে নতুন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলে আমরা দ্রæত ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহীর বেশিরভাগ পাবলিক টয়লেট আমার তত্ত¡াবধানে নির্মিত হয়েছে। তবে শহরের চাহিদার তুলনায় এগুলো এখনও পর্যাপ্ত নয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

এই সমস্যার সমাধানে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলা সভাপতি আহম্মেদ শফি উদ্দিন বলেন, নিয়মিত নজরদারি, যথাযথ আইন প্রয়োগ এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক পাবলিক টয়লেট স্থাপন জরুরি। প্রশাসনের উচিত জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে পথচারীরা নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারেন এবং শহরের সৌন্দর্য রক্ষা হয়। রাজশাহী রেল স্টেশনের ফুটপাতকে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে নাগরিক দুর্ভোগ আরও বাড়বে এবং শহরের পরিবেশ আরও দূষিত হবে।

 

 


নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ