ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫ , ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খানসামায় এক বছরে ৬০ জনের অপমৃত্যু


আপডেট সময় : ২০২৫-০১-১৫ ১৮:৫৮:৪৭
খানসামায় এক বছরে ৬০ জনের অপমৃত্যু ​খানসামা উপজেলা প্রধান ফটক।

 
মো. আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: গত এক বছরে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ২০২৪ সালে ৬০ জনের অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত এ অপমৃত্যু হয়েছে। থানার তথ্য অনুযায়ী ফাঁস নিয়ে ১৩, বিষপানে ১২, পানিতে ডুবে ৯, বিদ্যুৎস্পর্শে ৩, আগুনে পুড়ে ১ এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন মারা গেছেন। এতে গড়ে প্রতি মাসে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
 
এসব অপমৃত্যুর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, পারিবারিক কলহে ও অভিমান করে ফাঁস টানিয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের বেশিরভাগ বিবাহিত নারী। পানিতে ডুবার ঘটনায় দেখা যায় বেশিরভাগ শিশু, যা অভিভাবকদের অবহেলাজনিত সংকটের কারণে। বিষপান করে মারা গেছে উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা। তারা আবেগের বশে এ কাজ করেছে বলে জানা যায়। কীটনাশক নিষিদ্ধ করলে এটা অনেকটাই কমে যাবে বলে ধারণা সচেতন মহলের। তা ছাড়া সড়কপথে চালকদের বেপরোয়া গতি ও সচেতনতা ও নিয়ম-নীতি না মানায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে। 
 
সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, সমাজে বিদ্যমান ও বহমান ঘটনা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের চিরাচরিত সামাজিক ঐক্য, সপ্রীতি, সৌহার্দ্যের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। জগতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, মরণব্যাধি, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাশাপাশি এবং আত্মহত্যার মতো অপমৃত্যুর পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এই অপমৃত্যু থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সমাজের সুধী সমাজ, বিভিন্ন সংস্থা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। সর্বোপরি সুস্থ চিন্তা ও কর্মই একমাত্র পথ।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, অপমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। অপমৃত্যুর কারণগুলোকে প্রতিহত করতে হবে। আমাদের সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত ব্যাপার থাকে। বিষণ্ণতা থেকে মানুষ আত্মহত্যা করে। সেক্ষেত্রে সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট দিতে হবে। কখনো কখনো পারিবারিক নির্যাতন থেকেও হয়।
 
নির্যাতনের কারণগুলো সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করবে। সড়ক দুর্ঘটনায় বেশিরভাগ শিকার হয় তরুণরা, তারা অল্প বয়সে বাইক পেয়ে যায় এটাও একটা কারণ আবার ট্রাফিক আইন মেনে চলে না। সর্বোপরি আমাদের সচেতন হতে হবে।
 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, আমি মাত্র এসেছি। কখনোই অপমৃত্যু কাম্য নয়, এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের গড়তে গিয়ে শেখর বের করতে হবে। আগে দেখতে হবে এটা মানসিক কারনে হচ্ছে কিনা। যদি মানসিক কারনে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কউন্সিলিং করতে হবে, পরিবার থেকে সচেতনতা বাড়াতে হবে, ধর্মের মাধ্যমে বোঝাতে হবে। অনেক সময় হতাশা থেকে এসব হয়, আবার অনেক সময় জীবনের গতিবিধি সঙ্গে মেনে চলতে পারে না। এসব কারণেই মূলত হয়ে থাকে। অপমৃত্যু ঠেকাতে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি প্রচারণার মাধ্যমে রোধ করতে হবে। আমি আশা করি এ সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
 
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমূল হক বলেন, অপমৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। অপমৃত্যুর সঠিক কারণ বের করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এছাড়াও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এটা রোধ করা সম্ভব। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি দায়িত্ববোধ বাড়াতে হবে। সবাইকে সড়ক আইন মেনে চলতে হবে। আমরা অপমৃত্যু রোধে কাজ করছি।
 





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ