বিহারী মুরাদ দিদার এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে স্বাধীনতার পর গত জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি রক্ত দেখেছে বাংলাদেশ। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রদের দমন করতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামানো হয় র্যাব ও বিজিবি। এই আন্দোলনের সময় প্রাণহানি হয় কয়েকশ মানুষের। এসব ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে অধিকাংশকেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। সড়কে শিক্ষার্থীদের লাশের সারি দেখে ঘরে বসে থাকতে পারেনি সাধারণ মানুষ, সবাই নেমে আসেন রাজপথে। অবশষে গত ৫ আগস্ট জনরোষে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি আন্দোলনের সময় ঘটা বিভিন্ন নৃশংসতার ভিডিও সামনে আসতে শুরু করেছে। ঢাকার যেসব এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ তৎকালীন সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়, তার মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদপুর। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প মোহাম্মদপুর মার্কেট ক্যাম্পে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মতদদাতা স্থানীয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলুর পোষ্য ক্যাডার মুরাদ তার সহোদর দিদার, ইসমাইল,টিপু ,শাহজাদা ক্যাম্প থেকে মানুষ ভাড়া করে অবস্থান নেয় আসাদগেট আড়ংয়ের সামনে দেশীয় ধারালো অস্ত্র লাঠিসোটা নিয়ে এক তান্ডব লীলাই মেতে ওঠে এই সন্ত্রাসী গ্রুপ। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে কিভাবে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয় সেটি তাদের কাছে জানা, যার প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও থানাকে ম্যানেজ করে এলাকাতে আবারও সক্রিয় । গত ১৭-১৯ জুলাই এবং ৪ আগস্ট বিক্ষোভে উত্তাল ছিল মোহাম্মদপুর এলাকা। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বসিলা সড়কজুড়ে চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। তখন সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন, আর অগ্নিয়াস্ত্র হাতে তদের সামনে ছিলেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় প্রকাশ্যে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করেন তারা।
এসব ভিডিও, স্থানীয় লোকজন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একটি সূত্রে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো সন্ত্রাসীদের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আসিফ আহমেদ, একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীব এবং তৎকালীন স্থানীয় সংসদ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান বিপ্লব।
অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক সংসদ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান বিপ্লব আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন। তার গুলিতে একজনকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তি পরবর্তীতে মারা গেছেন বলেন নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা। তবে বিপ্লবের সঙ্গে থাকা অপরজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ এবং সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবেরা আত্মগোপনে চলে গেলেও তাদের ব্যবহারিত সন্ত্রাসী বাহিনী অবাধেই চলাফেরা করছে এই মোহাম্মদপুরে। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই মোহাম্মদপুরে প্রশাসন যেন হিমশিম খাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে। স্বৈরাশাস শাসক আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনীর প্রেতাত্তাদের নিয়ন্ত্রণে এনে আইনের কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণে শান্তি ফিরে আসুক এই মোহাম্মদপুরে ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News
কমেন্ট বক্স